মৃত্যু ব্যাক্তির কবর কেন্দ্রীক আমলগত বিদআত প্রথম কিস্তি

মৃত্যু ব্যাক্তির কবর কেন্দ্রীক আমলগত বিদআত প্রথম কিস্তি

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন।

আকিদার আলোচনায় দেখব সুফিরা মনে করেন, তাদের কল্পিত অলি, শাইখ, আওলিয়া, পীর কবরে আমাদের মতই জীবিত আছেন।  তারা মানুষের ভাল মন্দ করার ক্ষমতা রাখেন। তারা মরার পরও বিপদে আপদে সাহায্য করতে পারে এমনকি মরার পর তাদের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধিপায়। তাই তারা তাদের পীর বা অলি আওলিয়াদের আহবান করে এবং তাদের কবরের নিকট গিয়ে কোন কিছু বিপদে থেকে উদ্ধার কামনা করে। তদের পীরদের মাঝে আবার যারা গাউস, কুতুর, আবদাল, নকিব ইত্যাদি উপাধী পেয়েছেন তারা আরও বেশী হাজত পুরা করতে পারে। এই জন্য তারা তাদের অলী-আওলীয়া ও তরীকার মাশায়েখদের কবর পাকা করে, কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ, তাতে বাতি জ্বালানো, কবর ও মাযার যিয়ারত করার উপর বিশেষ গুরত্ব প্রদান করে থাকে। সেখানে তারা তাদের আহবান করে জরুরত পুরা করার জন্য দোয়া করে। অথচ দোয়া বা ফরিয়াদ শুধু আল্লাহর জন্যই খাস।

এভাবে তারা কবর কে মাজার (দর্শণীয় স্থান) এ পরিনত করে। আর হাজার হাজার ভক্ত তাদের ফরিয়াদ নিয়ে মাজারে সায়িত ব্যাক্তির নিকট ফরিয়াদ যানাতে আসে। হিন্দুরা যেমন সিজদা দ্বারা তাদের  দেবীকে খুসি করে ঠিক তেমনি অনেকে মাজার ভক্ত মুসলীম মাজারে সিজদা করে তার দ্বারা সায়িত ব্যক্তিকে খুসি করে তার সুপারিসের মাধ্যমে আল্লাহ সন্ত্বষ্টি কামনা করে যা তাদের হিন্দু বা  মুসরিক বানীয়ে দিয়েছে। যে মুসলীম এদের মুসরিক ভাবতে পারবে না, সে তাদেরই সমর্থক হবে। এভাবে মাজার কন্দ্রিক তারা উরশ এর আয়োজন করে, মাজার কে কাবার মত তাওয়াফ করে। মাজার কেন্দ্রিক কিছু আমল আলোচনা করা হলঃ

১। কবর কেন্দ্রিক মাজান নির্মাণ

২। উরশ উৎযাপন করা

৩। মাজারের চার পাশে তাওয়াফ করে

৪। মাযারকে ঘিরে বাতি প্রজ্বলন করে ও চাদর চড়ায়

৫। কবর পাকা করে, কবরের উপর গম্বুজ নির্মান করে

৬। কবর বা মাজারে মানত পেশ করা

৭। কবর বা মাজারে জন্তু জবেহ করা

৮। কবরকে অতিরিক্ত ভক্তি করা

৯। কবরে ধূপ, আগরবাতি ও মোমবাতি জ্বালানো

১০। মৃত্যুর আগেই কবর তৈরী করা

১১। কবরের গায়ে মৃতের নাম ও মৃত্যুর তারিখ লেখা

১২।কবরের উপর ঘর তৈরি করে বসবাস করা

১৩। কবর কেন্দ্রিক মসজিদ নির্মান করা

১৪। কবর জিয়ারতের বিদআত

*** কবর কেন্দ্রিক মাজান নির্মাণঃ

সুফিগন কবর কেন্দ্রিক মাজার তৈরি করে অনেক বিদআত ও শির্ক কাজ করে চলছে। অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে উম্মাতকে সতর্ক করেছেন।

তিনি বলেন,  হে আল্লাহ্‌! আমার কবরকে পূজার স্থানে পরিণত করো না, যাতে এর ইবাদত করা হয়। আল্লাহ্‌ অভিশাপ করেছেন ঐ জাতিকে যারা তাদের নবীদের কবর সমূহকে কেন্দ্র করে মসজিদ তৈরী করেছে। (মুসনাদে আহমাদ)।

আবু হুরায়রা (রাঃ) এর সূত্রে বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ ইহুদী খৃষ্টানদের প্রতি আল্লাহ্‌র লানত। কারণ তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে মসজিদে রূপান্তরিত করেছে।

আবূল হায়্যাজ আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আলী (রাঃ) আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে ঐ কাজে পাঠাব যে কাজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পাঠিয়ে ছিলেন? কাজটা হল সকল মূর্তিকে বিলুপ্ত এবং উচু কবরকে ভেঙ্গে দিবে। (সহিহ মুসলিম ২১১৫ ইফঃ)।

এমনিভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন, কবর পাকা করতে, চুনকাম করতে, তার উপর বসতে নিষেধ করেছেন।,

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের উপর চুনা লাগানো, তার উপর বসা, কবরের উপর গৃহনির্মাণ বা পাকা করতে নিষেধ করেছেন।(সহিহ মুসলিম ২১১৭ ইফঃ)।

***  উরশ উৎযাপন করাঃ

সুফিগন তাদের শইখদের করবকে কেন্দ্রকরে প্রতিবছর মৃত্যু বার্ষিকীতে উরশ পালন  করে থাকে।  আশরাফুল জওয়ার এর প্রথম খন্ডের ১০৫ উরশ সম্পর্কে আশরাফ আলি থালভী রহঃ এর একটি উত্তর থেকে উরশের সজ্ঞা জেনে নেই। তিনি বলেন, মানুষ বর্তমানে বুযুর্গেদের নামে উরসের যে পন্থা অবলম্বন করেছে এটা শরীয়ত সিদ্ধ নয় এবং সীমালংঘনের শামিল। মূলত উরসের আভিধানিক অর্থ আনন্দ ও খুসি, প্রেমীক-প্রেমাস্পদের মিলনের যা অর্জিত হয় থাকে। ওফাতের মাধ্যমে যেহেতু প্রেমাস্পদের সাথে তাদের মিলন সাধিত হয়, কাজেই তাদের মৃত্যু দিবসকে ইয়াওমুল উরস বলা হয়।

সুফিগন আল্লাহর সাথে প্রেম বা ইশক করার দাবি করে। মারাগেলে মহান আল্লাহ সাথে তাদের বিরহ ব্যাথার সমাপ্তি ঘটে তাই তাদরে মৃত্যু বার্ষিকীতে উরশ নামক উৎসব পালণ করে থাকে।  এবার দেখুন উরশের অর্থ যদি  প্রেমিক প্রেমাস্পদের মিলন হয় তবে কুফরি হবে কি? আসলে সুফিদের পরিভাষাই কুফরিতে ভরপুর। কাজেই কোন পীর বা অলী যা বলে ডাকি না কেন। কার মৃত্যুকে উৎসব বানিয়ে পালন করা মারাত্বক বিদআতি কাজ। পীরভক্ত মানুষ এই সকল কাজ করে নেকীর আশায়। করছে ইসলাম বিরোধী কাজ, আর আশা করছে আল্লাহ স্বন্তষ্টি। এই ধরনের কাজ মহান আল্লাহ চরম ক্রোধের কাজ। তাই এই সকল বিদআত পরিহার করে সুন্নাহ সম্মত জীবন গড়ি।

***  মাজারের চার পাশে তাওয়াফ করেঃ

কাবা ঘরের চারপাশে তাওয়াফ করা একটি ইবাদাত। আর এই ইবাদাতটি করার জন্য তিনি নিজেই কুরআনের কারিমে আদেশ দান করেছেন। তিনি বলেন,

ثُمَّ لْيَقْضُوا تَفَثَهُمْ وَلْيُوفُوا نُذُورَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ

এরপর তারা যেন দৈহিক ময়লা দূর করে দেয়, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং এই সুসংরক্ষিত গৃহের তাওয়াফ করে। [ সুরা হাজ্জ্ব ২২:২৯ ]।

তাই সকল মুসলিমের কাছে অতি সুস্পষ্ট যে তাওয়াফ এমন একটি এবাদত, যা কাবা ঘরের চতুর পার্শ্বে এবং একমাত্র আল্লাহর জন্যই করতে হবে। কিন্তু মিশরে সায়্যেদ বদভীর কবরের চতুর্দিকে সুফীরা কাবা ঘরের তাওয়াফের ন্যায় তাওয়াফ করে থাকে। সুফিদের শাইখদের মাজারের চার পাশের এই তাওয়াফ সম্পুর্ণভাবে হারাম এবং ইবাদাতে তার সাথে শির্ক কাজ।

*** মাযারকে ঘিরে বাতি প্রজ্বলন করে ও চাদর চড়ায়।

সুফিগন মাযাবে যে সকল বিদআত করে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হল মাযাবে চাদর চড়ান, মুমবাতি ও আগর বাতি প্রজ্বলন। এর ধরনের বিদাআতি কাজ ইসলামের প্রাথমিক যুগে ছিলনা। আস্তে আস্তে মুসরিকদের মাঝে প্রসার ঘটে। তবে এই সকল কাজ সমাজে মুসরিক, অগ্নি পুজকদের মাঝে প্রচলিত থকলেও মুসলিমদের মাঝে ছিলনা। কাল ক্রমে মুসরিকদের নিকট থেকেই  মুসলিমদের মাঝে প্রবেশ করে, আজ যা মুসলিদের বিশেষ একটা অংশ ইবাদাত মনে করে পালন করে থাকে।

অথচ হাদিসে এসেছে, “হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিশম্পাত করেছেন (বেপর্দা) কবর যিয়ারতকারীনী মহিলাদের উপর, এবং সে সব লোকদের উপর যারা কবরকে মসজিদ বানায় (কবরকে সেজদা করে) এবং সেখানে বাতি প্রজ্জ্বলিত করে। (জামি তিরমীযী-২/১৩৬)।

উক্ত হাদিসে সুষ্পষ্ট কবরে বাতি প্রজ্জ্বলনকারীর উপর আল্লাহ তায়ালার অভিশম্পাত করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এই হেন বিদআতকে না বলি এবং পরিহার করে চলি।

***  কবর পাকা করে, কবরের উপর গম্বুজ নির্মান করে।

মৃত্যু বরন করার পর অধিকাংশ সুফিরাদের নামে তার ভক্তরা কবর পাকা করে থাকে। আস্তে আস্তে পাকা করব কে মাজার (দর্শণীয় স্থান) বলতে শুরু করে। এ মাযারের প্রাচর প্রসারের জন্য তারা এ পাশেই বিশাল আকৃতির গম্বুজ নির্মণ করে। বার বার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবরের উপর সৌধ স্থাপন করা থেকে নিষেধ করেছেন।

আবুল হাইয়াজ আল আসাদী থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, আলী বিন আবু তালিব রাদি আল্লাহু আনহু আমাকে বলেন যে, আমি কি তোমাকে সেই দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করব না, যে দায়িত্ব দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে প্রেরণ করেছিলেন? তা হলো যেখানেই প্রতিমা ও ভাস্কার্য দেখবে ভেঙ্গে ফেলবে এবং যেখানেই সুউচ্চ কবর দেখবে সমান করে দেবে’। (সহিহ মুসলিম)।

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের উপর চুনা লাগানো, তার উপর বসা, কবরের উপর গৃহনির্মাণ বা পাকা করতে নিষেধ করেছেন। (সহিহ মুসলীম ২১১৭ ইফাঃ)

অনুরূপ ভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবরে চুনকাম করা ও সৌধ তৈরী করা থেকে নিষেধ করেছেন। 

আবূল হায়্যাজ আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, আলী (রাঃ) আমাকে বললেন, আমি কি তোমাকে ঐ কাজে পাঠাব যে কাজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পাঠিয়ে ছিলেন? কাজটা হল সকল মূর্তিকে বিলুপ্ত এবং উচু কবরকে ভেঙ্গে দিবে। (সহিহ সহিহ  মুসলিম ২১১৫ ইফঃ)

সহীহ মুসলিমের আরেকটি বর্ণনায় সুমামাহ বিন শুফাই বলেন, আমরা রোম দেশের বুরুদেস নামক স্থানে ফাদালাহ বিন উবায়েদ এর সাথে ছিলাম। সেখানে আমাদের এক সাথী মারা গেলেন। তার দাফন কার্যের সময় ফাদালাহ তার কবর সমান করে দেবার হুকুম দিলেন। অতঃপর বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি যে, তিনি কবরকে সমান করে দেবার হুকুম দিয়েছেন।

***  কবর বা মাজারে মানত পেশ করাঃ

আমাদের সমাজে অনেক কে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, খানকা, দরগা, মাজার, পীরের আস্তানা, কোন ওয়াজ মাহফিল কে কেন্দ্র করে, সরল প্রান মুসলিম মোমবাতি, তেল, আগরবাতি, টাকা-পয়সা, গরু-খাসি, মোরগ-মুরগী, কবুতর, ভাল কোন ফল ফলাদী, জমির ফসল ইত্যাদি মানত করে। তারা মনে করে এর মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য হাছিল হবে, রোগমুক্তি হবে, হারানো ব্যক্তিকে ফিরে পাবে, মালের নিরাপত্তা লাভ হবে, নিঃসন্তানের সন্তান হবে ইত্যাদি।

এ ধরনের মানত কত টুকু শরীয়ত সম্মত?

সকল প্রকারের মানত করতে শরীয়ত নিরুৎসাহিত করছে। এ সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকায় অনেকে মানত কে ইবাদাত মনে করে পালন করছে। কিন্তু সবচেয়ে মারাত্বক কথা হল এই মানত কখনও শির্কি কাজ হয়ে যায়।  যা মুসলিম কে ইসলাম থেকে বের করে দেয়। সমাজের সুফি বা পীরদের মাজার কে কেন্দ্র করে যত প্রকার মানত চালু আছে তা ষ্পষ্ট শির্ক কাজ।

সুফিদের মাজারে দান, সদকা, মানত ইত্যাদি করে থাকে তারা তিনটি নিয়তে করে থাকে

১। মাজারে মানত করলে মাজারে শায়িত ওলী খুশী হন। তিনি খুশী হলে তার নেক নজরে আমার মনের আশা পূরণ হবে এবং আমার বিপদ দূর হবে।

২। মাজারে মানত করলে মাজারে শায়িত ওলীর অসীলায় বা শাফাআতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের করব।

৩। অনেকে বল থাকেন, আমরা মানত করছি আল্লাহর জন্যই। আমরা বিশ্বাস করি মাজারে শায়িত আল্লাহর ওলী পরকালে কঠিন সময় তার সুপারিস করতে পারবেনা।  তিনি কারও কোন ভাল-মন্দ করার ক্ষমতা রাখেন না। তাঁর দোয়া বা নেক নজর পাওয়ার নিয়তও আমি করি না। তাঁর শাফাআত বা অসীলাও আমার উদ্দেশ্য নয়। তবে তিনি আল্লাহর ওলী, তাকে সম্মান করা সওয়াবের কাজ এ জন্য আমি মাজারে মানত করি। দান-সদকা করি।

তাহলে এই তিনটি নিয়তে মানত করা কি? মহান আল্লাহ বলেন,

أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلۡخَالِصُ‌ۚ وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦۤ أَوۡلِيَآءَ مَا نَعۡبُدُهُمۡ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَآ إِلَى ٱللَّهِ زُلۡفَىٰٓ إِنَّ ٱللَّهَ يَحۡكُمُ بَيۡنَهُمۡ فِى مَا هُمۡ فِيهِ يَخۡتَلِفُونَ‌ۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِى مَنۡ هُوَ كَـٰذِبٌ۬ ڪَفَّارٌ۬ (٣) 

অর্থঃ সাবধান! একনিষ্ঠ ইবাদাত কেবল আল্লাহরই প্রাপ্য৷ যারা তাঁকে ছাড়া অন্যদেরকে অভিভাবক বানিয়ে রেখেছে (আর নিজেদের এ কাজের কারণ হিসেবে বলে যে) আমরা তো তাদের ইবাদাত করি শুধু এই কারণে যে, সে আমাদেরকে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেবে৷  আল্লাহ নিশ্চিতভাবেই তাদের মধ্যকার সেসব বিষয়ের ফায়সালা করে দেবেন যা নিয়ে তারা মতভেদ করছিলো৷ আল্লাহ এমন ব্যক্তিকে হিদায়াত দান করেন না, যে মিথ্যাবাদী ও হক অস্বীকারকারী৷( সুরা জুমার ৩৯:৩)।

এবার এই হাদিসটি লক্ষ করুনঃ

ছাবিত বিন আয-যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাসূলের যুগে বাওয়ানা (ইয়ালামলাম পাহাড়ের পাদ দেশে অবস্থিত) নামক স্থানে একটি উট কুরবানী করার মানত করল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘সে স্থানে এমন কোন মূর্তি ছিল কি, জাহেলী যুগে যার পূজা করা হত? ছাহাবায়ে কেরাম বললেন, না। তিনি বললেন ‘সে স্থানে কি তাদের কোন উৎসব বা মেলা অনুষ্ঠিত হত? তারা বললেন, না। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তুমি তোমার মানত পূর্ণ কর। কেননা আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে মানত পূর্ণ করা যাবে না। আদম সন্তান যা করতে সক্ষম নয়, এমন মানতও পুরা করা যাবে না। (আবূদাঊদ হা/৩৩১৫, কিতাব আল আইমান ওয়ান-নুযূর; ইবনু মাজাহ হা/২১৩০, সনদ ছহীহ।)

মন্তব্যঃ উক্ত আয়াত ও হদিস এ কথা প্রমান করে যে,  উপরের তিনটির নিয়তের যে কোনো একটি নিয়তে মাজারে মানত করলে শির্কি কাজ হবে।  আর একটু লক্ষ করুন, মাহান আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানী ও মর্যাদাপূর্ণ হল তান নির্বাচিত নবী রাসূলগণ, যদি কবর মাজারে সমূহে কোন নযরানা, মানত দেওয়া হত তবে তাদের হক সবচেয়ে বেশী। আর মহান আল্লাহ এ মানতের ব্যাপারটি আমাদের নবী দ্বারা আমাদের শরীয়তে চালু রাখতেন। তাই পূর্বের কোন নবী রাসুলদের কবরে মানত করা তাদের নৈকট্যে অর্জন করা চেষ্টা করা শির্ক কাজ। আর আমাদের সমাজের প্রচলিত অলী আওলীয়াদের নামে বা তাদের কবর/মাজারের নামে মানত করা যে শির্ক কাজ এত কারও দ্বিমত থাকার কথা নয়।

আমাদের সমাজে সুফিবাদি আলেমদের সংখ্যা অনেক তারা সুরেলা কন্ঠে বলে থাকেন যে আপনি যদি খানকা, এতিমখানা মাদ্রাসা, মসজিদ,দরগা, পীরের আস্তানা, মাজার ইত্যাদিতে মানত করেন তবে আপনার তাহলে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে, বিপদ দূর হয়ে যাবে। আমাদের এই দরবারে বা খানকায় মানত করে কেহ বিফল হয়নি। যে যে নিয়তে মানত করবে তার সেই নিয়ত পূর্ণ হবে। আসলে এই সকল লোক আলেম হলেও এরা প্রকৃত ইলমের অভাবে আলেম নন। তারা নিজেরাও বিভ্রান্ত আবার অন্যদেরও বিভ্রান্ত করে থাকেন।

মন্তব্যঃ মান্নত আদায় করা কখনো কখনো ফরজ আবার কখনো হারাম। কিন্তু অধিকাংশ ইমাম ও ফেকাহবিদ মান্নত করাকে মাকরূহ বলেছেন আর এ অভিমতটিই সঠিক। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মান্নত করতে নিষেধ করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে সব সময় উম্মতদের নিরুৎসাহিত করেছেন। বিষয়টি আমরা অনেকেই জানি না। বরং মনে করি মানত করা খুব সওয়াবের কাজ। আসলে এটি কোনো সওয়াবের কাজ নয়। তবে মানত আদায় করা সওয়াবের কাজ।

আবূ নুআঈম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন এই মর্মে তিনি বলেন, মানত কোন জিনিসকে দূর করতে পারে না। এ দ্বারা শুধুমাত্র কৃপণের মাল খরচ হয়। (সহিহ বুখারি হাদিস ৬১৫৫, ৬২৩৬ ইঃ ফাঃ; সহিহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৩২৫))

বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ মানত মানব সন্তানকে এমন কিছু এনে দিতে পারে না যা তাকদীরে নির্ধারণ নেই অথচ সে যে মানতটি করে তাও আমি তাকদীরে লিপিবদ্ধ করে দিয়েছি যেন এর দ্বারা কৃপণের কাছ থেকে (মাল) বের করে নেই। (সহিহ বুখারি হাদিস ৬১৫৬, ৬২৩৭ ইঃ ফাঃ)

***  কবর বা মাজারে জন্তু জবেহ করাঃ

পশুকে যবেহ একটি ইবাদাত। ইবাদাতের জন্য অবশ্য আল্লাহর হুকুম এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহর অনুসরন করতে হবে। এই জন্য আল্লাহ পশুকে যবেহ করার নীতিমালা ঘোষনা করছেন। সুফিরা সাধারনত বছরে ১/২ বার উরশ মাহফিল আয়োজন করে, তখন তাদের ভক্তরা উরশ উপলক্ষে গাইরুল্লাহর নামে গরু, মহিষ, উট, ভেড়া, ছাগল ইত্যাদি জবেহ করে এবং তাদের ভক্তদের খানা পানার ব্যবস্থা করেন।

পীরের নামে, মাজারের নামে, তরিকান নামে পশু জবেহ করা শির্কি কাজ। যে সকল লোক আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে পশু জবেহ করে তারা মুশরিক। তাই মুমিনের ফরজ দায়িত্ব হল আল্লাহর নামে জবেহ করা যার কোন শরিক নাই। এ কথাই আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন,

 وَلَا تَأۡڪُلُواْ مِمَّا لَمۡ يُذۡكَرِ ٱسۡمُ ٱللَّهِ عَلَيۡهِ وَإِنَّهُ ۥ لَفِسۡقٌ۬‌ۗ وَإِنَّ ٱلشَّيَـٰطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰٓ أَوۡلِيَآٮِٕهِمۡ لِيُجَـٰدِلُوكُمۡ‌ۖ وَإِنۡ أَطَعۡتُمُوهُمۡ إِنَّكُمۡ لَمُشۡرِكُونَ (١٢١)

 অর্থঃ আর যে পশুকে আল্লাহর নামে যবেই করা হয়নি তার গোশ্ত খেয়ো না৷ এটা অবশ্যি মহাপাপ৷ শয়তানরা তাদের ঝগড়া করতে পারে৷  কিন্তু যদি তোমরা তাদের আনুগত্য করো তাহলে অবশ্যি তোমরা মুশরিক হবে৷ (সুরা আনআম ৬:১২১)।

এখানে আল্লাহ তাআলা অন্য ধর্মের লোকদের বিধান অনুযায়ী চলা এবং তাদের আনুগত্য করিকে মুশরিক বলেছেন। কারন জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে শুধু আল্লাহর আনুগত্য কায়েম করার নামই তাওহীদ। অপর পক্ষে জবেহর সময় যে পশুর ওপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তার গোশ্‌ত খাও হলাল করা হয়েছে৷ আল্লাহ তাআলা বলেন,

 فَكُلُواْ مِمَّا ذُكِرَ ٱسۡمُ ٱللَّهِ عَلَيۡهِ إِن كُنتُم بِـَٔايَـٰتِهِۦ مُؤۡمِنِينَ (١١٨)

অর্থ: এখন যদি তোমরা আল্লাহর আয়াতসমূহ বিশ্বাস করে থাকো, তাহলে যে পশুর ওপর আল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে তার গোশ্ত খাও৷ (সুরা আনআম ৬:১১৮)।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

إِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيۡڪُمُ ٱلۡمَيۡتَةَ وَٱلدَّمَ وَلَحۡمَ ٱلۡخِنزِيرِ وَمَآ أُهِلَّ بِهِۦ لِغَيۡرِ ٱللَّهِ‌ۖ

অর্থ: আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর যদি কোন নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকে তাহলে তা হচ্ছে এই যে, মৃতদেহ খেয়ো না, রক্ত ও শূকরের গোশত থেকে দূরে থাকো। আর এমন কোন জিনিস খেয়ো না যার ওপর আল্লাহ ছাড়া আর কারোর নাম নেয়া হয়েছে। (সুরা বাকারা ২:১৭৩)।

মন্তব্যঃ কাজেই মাজারের নামে বা পীরের নামে পশু জবেহ করা জায়েয হবেনা। দরগাহ বা কাবরের পাশে গরু ছাগল ইত্যাদি যবেহ করা ও খাবার বিতরণ করা সবই বিদআত।

***  কবরকে অতিরিক্ত ভক্তি করাঃ

উপমহাদেশে কবরের প্রতি ভক্তি অনেক পুরান। আমাদের পূর্ব পুরুষ হিন্দু ছিল, মুর্তি পুজার প্রতি তাদের বড় ঝোক ছিল। অনেকে হিন্দু থেকে কালের আবর্তে মুসলীম হয়েছে ঠিকই কিন্ত জ্ঞানের সল্পতার কারনে কবর কে মুর্তির মত পুজা শুরু করে। তাই তারা এই পরম পুজনীয় মাযারের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা প্রদর্শণ করে থাকে। তারা মনে করে তাদের নির্মিত মারাজের বুজুর্গ ব্যক্তি মাযারের মধ্যে জীবিত তাই তারা মৃত্যুর পর মাজার বা কবর পাহারা দেয়ার জন্য পাহাদার বসিয়েছে। মযাবের কবরের উপর মশারি টাঙ্গিয়েছে। এমন কি তারা কবরের উপরে ছায়া প্রদানের জন্য শামিয়ানা টাঙ্গিয়ে থাকে। যখনই কোন মাজার ভক্ত মাজারে যায় তখন তারা হিন্দুদের মত হাত মুখে ও কপালে লাগায়। কবরকে তারা এতই বরকত মনে করে যে কবরের গায় তারা হাত লাগায় এবং পেট ও পিঠ ঠেকায় এবং অনেকেই কবরকে চুম্বন করে। বুজুর্গের মাযার বা কাবরস্থান থেকে ফিরে আসার সময় কবরের দিকে মুখ করে বেরিয়ে আসা। তাদের এই অতিরিক্ত ভক্তি করাকে হিন্দুদের মুর্তি ভক্তির চেয়ে সামান্য টুকুও কম নয়। তাদের মাজার আর হিন্দুদের মুর্তির পার্থক্য হল তাদের বুজুর্গ মাটির নিছে আর হিন্দুদের মুর্তি মাটির উপরে। কাজেই যদি কেউ মুর্তি ভক্তি দেখে থাকেন তাকে আর মাজার ভক্তি দেখার দরকার নেই।

*** কবরে ধূপ, আগরবাতি ও মোমবাতি জ্বালানোঃ

ইসলামে আগরবাতি ও ধূপশলা জ্বালানো বৈধ কি বৈধ নয় তা নির্ভর করে ব্যক্তির বিশ্বাস ও উদ্দেশের উপর। এসব জ্বালানোর পেছনে যদি তার আপত্তিকর কোন বিশ্বাস বা উদ্দেশ্য না থাকে বরং নিছক সুগন্ধি গ্রহণ কিংবা দুর্গন্ধ দূরীকরণই উদ্দেশ হয় তাহলে তাতে কোনো বিধি নিষেধ নেই। যেমন মরদেহ থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধ দূরীকরণের লক্ষে খাটিয়ার চার পাশে আগরবাতি বা এ জাতীয় গন্ধকী বস্তু জ্বালানোর কথা বলা হয়। ধর্মীয় অনেক অনুষ্ঠানেও আগরবাতি ও গোলাপ জলের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এগুলোকে যদি আবশ্যকীয় মনে না করে ব্যবহার করা হয় তাহলে তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে অনেক সমাজে আগরবাতি ও গোলাপ জলকে আবশ্যকীয় ধর্মীয় অনুষঙ্গ জ্ঞান করে থাকে। এটা নিষিদ্ধ। সমাজের এ আবশ্যকীয় ধারণা বিলুপ্ত করার লক্ষে এগুলোর ব্যবহার পরিহার করাই শ্রেয়। 

***  মৃত্যুর আগেই কবর তৈরী করাঃ

আজ কাল অনেকে তার মৃত্যুর আগেই কবর তৈরী করছেন। এই কাজটি কোন অবস্থায় সুন্নাহ নয়। কারন আমাদের বা সাহবী এই কাজ করেন নাই। তবে হ্যা, মরার পূর্বে অসিয়াত করে যেতে পারে আমাকে অমুকের পাশে অমুক স্থানে কবরস্থ করবে। তবে কোন কারনে তার অসিয়ত না পানতে পারলেও সমস্যা নাই। কিন্তু নিজের কবর নিজে তৈরি করে রেখে যাওয়া একটি নব আবিস্কার বিদআত। এখন অনেক স্থায়ীভাবে কবরের জায়গা বিক্রি করছে এটি আর একটি বিদআত। ঢাকার আবাসন মেলায় জমির ফ্লটের মত কবরের ও জায়গা বুকিং নিচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠান তারা কররের জন্য জমি বিক্রি করছে। তাদের দাবি এই জমি টুকু মালিক চির দিনের জন্য দেয়া হবে এবং এখানে আর কেউ কবর দিতে পারবে না। অর্থাৎ তারা স্থায়ীভাবে কবরের জায়গা বিক্রি করছে। ইসলামের সৌন্দর্য হল, মানুষের লাশ কয়েক বছর পর পচে মাটির সংঙ্গে মিসে গেলে তার আর কোন অস্তিত্ব থাকে না। এবং সেই স্থানে আবার লাশ দাফন করলে কোন সমস্যা নাই। এ কারনে একটু বড় কবস্থান ৪/৫ বছেরর পর আবার নতুন করে সমসংখ্যাক লাশ দাফন করা যায়। কিন্তু স্থায়ীভাবে লাশ দাফন করলে এই রি-সাইকেল করা সম্ভব নয়। যার ফলে ঘন বসতিপূর্ণ স্থানে জমির পরির্তে কবর আর কবর দেখা যাবে। মানুষের থাকার স্থান থেকে কবরের জাযগা বেশী হবে। এক টুকরা জমির অভাবে গরীর আর কবরস্থ হবে না। তাই এই ধরেন বিদআত থেকে এখনই সাবধান হই।  নিজেও স্থায়ী কবরের জায়গা কিনব না অন্যদেরও নিকনে নিরুৎসাহিত করি।

***  কবরের গায়ে মৃতের নাম ও মৃত্যুর তারিখ লেখাঃ

তিরমিজি ইফা ১০৫২. আবদুর রহমান ইবনুল আসওয়াদ আবূ আমর আল বাসরী (রহঃ) ….. জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরে চুনা লাগাতে এবং তাতে লিখতে, এর উপর ঘর নির্মাণ করতে ও তা পদদলিত করতে নিষেধ করেছেন। আহকামুল জানাইয ২০৪, তাহযীরুস সাজিদ ৪০, ইরওয়া ৭৫৭, “লিখতে নিষেধ করেছেনব্যতিতমুসলিম, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১০৫২ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-সাহীহ। জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে একাধিক সূত্রে এটি বর্ণিত আছে। হাসান-বাসরী সহ কতক আলিম কবর মাটি দিয়ে লেপার অনুমতি দিয়েছেন। ইমাম শাফিঈ (রহঃ) বলেন, মাটি দিয়ে কবর লেপায় কোন দোষ নেই।

 সাধরণত যারা কবর পাকা করেন তারা কবরের গায়ে মৃতের নাম ও মৃত্যুর তারিখ লিখে রাখেন মাইয়াতে সৃত্মি স্বরনের জন্য। এখানে দুটি ইসলাম বিরোধী কাজ হচ্ছে। একটি হল কবর পাকা করা অপরটি হল তার গায়ে মৃতের নাম ও মৃত্যুর তারিখ লিখে রাখা।  আমাদের সালাফগন সাহাবী, তাবেয়ী বা তাবে-তাবেয়ীদের থেকে এর কোন প্রমান পাওয়া যায়।  মদীনায় গিয়ে সাহাবীদের কবরস্থানে গিয়ে কোন সাহাবীর করব কোনটি কেউ জানতে পারবেনা। অথচ তারাই ছিলেন ইসলামে অনুকরণীয় আদর্শ। কেউ বলতে পারেন তাদের নাম ফলক ছিলে সময়ে সাথে এ সবগুলী চলে গিয়েছে। তাদের কবর দেখে নয় লক্ষ লক্ষ হাদিসের মাধ্যমে তাদের কবরস্থান ও কবরের পদ্ধতি খুজে দেখবেন কোথাও তারা কবর প্রদানের সময় তাদের নাম কবরের গায়ে লিখে রাখেন নি। কাজেই এই সকল বিদআত থেকে আমরা বেচে থাকার চেষ্টা করি এবং কবরের গায়ে মৃতের নাম ও মৃত্যুর তারিখ লেখার সংস্কুতি থেকে বের হয়ে আসি।

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন এ্যারাবিক লিটারেচার, ইসলামিক হিস্টরী এন্ড ইসলামিক স্টাডিস)

Leave a comment