বাইতুল্লাহ বিভিন্ন অংশের বর্ণনাঃ চতুর্থ কিস্তি

বাইতুল্লাহ বিভিন্ন অংশের বর্ণনা চতুর্থ কিস্তি

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন

৭। বাইতুল্লাহ গিলাফঃ

বাইতুল্লাহকে কারুখচিত একটি কালো কাপড় দ্বারা আবৃত করে রাখা হয় যাকে আমরা গিলাফ বলা হয়। আরবের লোকেরা ইহাকে ‘কিসওয়া’ বলে থাকে। প্রতি বছর এই কাপড়টি পরিবর্তন করে আরেকটি কাপড় দ্বারা আবৃত করা হয়। হজ্জের কয়েক দিন আগে থেকেই কাবা শরিফের গিলাফের নিচু অংশ উপরের দিকে তুলে দেওয়া হয়। এতে কাবা শরিফের দেয়ালের বাইরের অংশ দেখা ও ধরা যায়। কাবাঘরের দরজা ও বাইরের গিলাফ দুটোই মজবুত রেশমি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। গিলাফের মোট পাঁচটি টুকরো বানানো হয়। চারটি টুকরো চারদিকে এবং পঞ্চম টুকরোটি দরজায় লাগানো হয়। টুকরোগুলো পরস্পর সেলাইযুক্ত।

প্রতিবছর আরাফার দিন ৯ জিলহজ্জ একটি নতুন গিলাফ দ্বারা কাবাঘরকে আবৃত করা হয়। তখন পুরাতন গিলাফটি খুলে ফেলা হয়। এই দিন হাজ্জিগন আরাফায় অবস্থান করে বিধায় বাইতুল্লাহ খালি থাকে। আর মসজিদে হামারের কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে গিলাফটি পরিবর্তন করে থাকেন। ১০ জিলহজ্জ হাজ্জিগণ মক্কায় ফিরে কাবাঘরের গায়ে নতুন গিলাফ দেখতে পান। প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন রেশম দিয়ে তৈরি করা হয় কাবার গিলাফ। রেশমকে রং দিয়ে কালো করা হয়। পরে গিলাফে বিভিন্ন দোয়ার নকশা আঁকা হয়। গিলাফের উচ্চতা ১৪ মিটার। ওপরের তৃতীয়াংশে ৯৫ সেন্টিমিটার চওড়া বন্ধনীতে কোরআনের আয়াত লেখা। বন্ধনীতে ইসলামি কারুকাজ করা একটি ফ্রেম থাকে। বন্ধনীটি সোনার প্রলেপ দেওয়া রুপালি তারের মাধ্যমে এমব্রয়ডারি করা। এই বন্ধনীটা কাবা শরিফের চারদিকে পরিবেষ্টিত। ৪৭ মিটার লম্বা বন্ধনীটি ১৬টি টুকরায় বিভক্ত। বন্ধনীটির নিচে প্রতি কোনায় সূরা আল-ইখলাস লেখা। নিচে পৃথক পৃথক ফ্রেমে লেখা হয় পবিত্র কোরআনের ৬টি আয়াত। এতে এমব্রয়ডারি করে ওপরে সোনা ও রুপার চিকন তার লাগানো হয়।

বাইতুল্লাহ গিলাফ সম্পর্কে কয়েকটি হাদিসঃ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমাযানের সওম ফর্‌য হওয়ার পূর্বে মুসলিমগণ ‘আশূরার সওম পালন করতেন। সে দিনই কা‘বা ঘর (গিলাফে) আবৃত করা হত। অতঃপর আল্লাহ যখন রমাযানের সওম ফর্‌য করলেন, তখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আশূরার সওম যার ইচ্ছা সে পালন করবে আর যার ইচ্ছা সে ছেড়ে দিবে। (সহিহ বুখারি ১৫৯২)

নাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের বছর আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম লৌহ শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায় (মক্কা) প্রবেশ করেছিলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শিরস্ত্রাণটি মাথা হতে খোলার পর এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বললেন, ইব্‌নু খাতাল কা’বার গিলাফ ধরে আছে। তিনি বললেনঃ তাকে তোমরা হত্যা কর।(সহিহ বুখারি ১৮৪৬)

৮। রুকনে ইয়ামানীঃ

রুকনে ইয়ামানী এটি কাবাঘরের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে অবস্থিত। এটি ইয়ামান দেশের দিকে হওয়াতে একে রুকনে ইয়ামানী বলা হয়েছে থাকে। কাবা ঘরের এই অংশে কখনো  চুম্বন  করবেন না, তবে স্পর্শ করা মুস্তাহাব। মনে রাখতে হবে শুধু হাজরে আসওয়াদ পাথটি চুম্বন করব আর রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করব।  যা সহহি হাদিস দ্বারা প্রমানিত। ইহা ছাড়া অন্য কোন স্থান ষ্পর্শ বা চুম্বন কোন সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত হয়। যা হয় শুধুই আবেগের ফল। বিষয়টি বুঝার জন্য একটি উদাহরণ দেই।

একবার হযরত মু‘আবিয়া ও ইবনু আববাস (রাঃ) একত্রে ত্বাওয়াফরত অবস্থায় মু‘আবিয়া (রাঃ) কাবাগৃহের সবগুলি রুকন (চারটি কোণ) স্পর্শ করলে ইবনু আববাস (রাঃ) তার প্রতিবাদ করে বলেন, কেন আপনি এ দু’টি রুকন স্পর্শ করছেন? অথচ রাসূল (ছাঃ) এ দু’টি স্পর্শ করেননি। জবাবে মু‘আবিয়া (রাঃ) বলেন, কা‘বাগৃহের কোন অংশই পরিত্যাগ করার নয়। তখন ইবনু আববাস আয়াত পাঠ করে শোনালেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যেই উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে’ (আহযাব ২১) জবাবে মু‘আবিয়া (রাঃ) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন’। (ত্বাবারাণী আওসাত্ব ২৩২৩, আহমাদ ৩৫৩২ হাদিসে সনদ সহহি)

আবদুল্লাহ্ ইবন উবায়দ ইবন উমায়ার (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি বললো: হে আবু আবদুর রহমান! আমি আপনাকে এই দু স্তম্ভ (দু’রুকনে ইয়ামানী) ব্যতীত অন্য কোন স্তম্ভ চুম্বন করতে দেখি না। তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ এদের স্পর্শ করা গুনাহ দূর করে দেয় এবং তাঁকে এও বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি সাতবার তাওয়াফ করে, সে একটি গোলাম আযাদ করার সাওয়াব পাবে। (সুনানে নাসাঈ ২৯২২ হাদিসের মান সহিহ)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর সুন্নত হচ্ছে, এটিকে চুমু না দিয়ে শুধু স্পর্শ করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে এ রুকনটিতে স্পর্শ করতেন।

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দুই ইয়ামানী রুকন ব্যতীত বায়তুল্লাহর অন্য কিছু স্পর্শ করতে দেখিনি।  (সহিহ মুসলিম ২৯৫১)

উবায়দ ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ)-কে বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমি আপনাকে এমন চারটি কাজ করতে দেখি, যা আপনার অন্য কোন সঙ্গীকে করতে দেখিনা। তিনি বললেন, ‘ইবনু জুরায়জ, সেগুলো কি?’ তিনি বললেন, আমি দেখি, (১) আপনি তাওয়াফ করার সময় রুকনে ইয়ামানী দু’টি ব্যতীত অন্য রুকন স্পর্শ করেন না। (২) আপনি ‘সিবতী’ (পশমবিহীন) চপ্পল পরিধান করেন; (৩) আপনি (কাপড়ে) হলুদ রং ব্যবহার করেন এবং (৪) আপনি যখন মক্কায় থাকেন লোকে চাঁদ দেখে ইহরাম বাঁধে; কিন্তু আপনি তারবিয়ার দিন (৮ ই যিলহাজ্জ) না এলে ইহরাম বাঁধেন না।

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেনঃ রুকনের কথা যা বলেছ, তা এজন্য করি যে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ইয়ামানী রুকনদ্বয় ছাড়া আর কোনটি স্পর্শ করতে দেখিনি। আর ‘সিবতী’ চপ্পল, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পশমবিহীন চপ্পল পরতে এবং তা পরিহিত অবস্থায় অজু করতে দেখেছি, তাই আমি তা করতে ভালবাসি। আর হলুদ রং, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তা দিয়ে কাপড় রঙিন করতে দেখেছি, তাই আমিও তা দিয়ে রঙিন করতে ভালবাসি। আর ইহরাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নিয়ে তাঁর সওয়ারি রওনা না হওয়া পর্যন্ত আমি তাঁকে ইহরাম বাঁধতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি ১৬৭ ইফাঃ)

৯। মুলতাযাম স্পর্শ করাঃ

মুলতাযাম শব্দের আক্ষরিক অর্থ এঁটে থাকার জায়গা। হাজরে আসওয়াদ থেকে কা‘বা শরীফের দরজা পর্যন্ত জায়গাটুকুকে মুলতাযাম বলে। বিদায়ি তাওয়াফের সময় হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফের নিয়মে বায়তুল্লাহ সাত বার প্রদক্ষিণ করবেন। তাওয়াফ শেষে ইচ্ছে হলে মুলতাযামে চেহারা, বুক ও দুই বাহু ও দুই হাত রেখে আল্লাহর কাছে যা খুশি চাইতে পারেন। এই কাজটি অবশ্য মুস্তাহাব।

১. আমর ইবনে শু‘আইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি (দাদা) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ‘ইবনে আমর (রাঃ) এর সাথে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করলাম। আমরা সাতবার তাওয়াফ শেষে কা‘বার পশ্চাতে নামায পড়লাম। অতঃপর আমি বললাম, আমরা কি আল্লাহর নিকট জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবো না? তিনি বলেন, আমি আল্লাহর নিকট জাহান্নাম থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি অগ্রসর হয়ে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন, অতঃপর হাজরে আসওয়াদ ও কা‘বার দরজার মাঝ বরাবর দাঁড়ান, অতঃপর তার নিজের বুক, হস্তদ্বয় ও গাল তার সাথে লাগান এবং বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এরূপ করতে দেখেছি। (সুনানে ইবন মাজাহ ২৯৬২)

২. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কা‘বা গৃহের দরজা এবং রুকনের মাঝামাঝি স্থানটি মুলতাযাম। মালিক (র) থেকে বর্ণিত, আমি জেনেছি, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা) বলতেন, হাজরে আসওয়াদ এবং কা’বা শরীফের দরজার মধ্যবর্তী স্থানটি হল মুলতাযাম। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)। (মুয়াত্তা মালিক ৯৪৬)

৩. আবদুর রহমান ইবন সাফওয়ান বলেন, ‘আমি মক্কা বিজয়ের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাথীদের কা‘বাঘর থেকে বের হতে দেখলাম। অতঃপর তারা কা‘বাঘরের দরজা থেকে নিয়ে হাতীম পর্যন্ত স্পর্শ করলেন এবং তাঁরা তাঁদের গাল বাইতুল্লাহ্‌র সাথে লাগিয়ে রাখলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাদের মাঝে ছিলেন। (সুনানে আবূ দাঊদ ১৮৯৮।

মন্তব্যঃ এই হাদীসের সনদে দুর্বলতা আছে। কিন্তু উপরে আবদুল্লাহ ইবন আমর থেকে বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, তিনি রুকন ও দরজার মাঝখানে দাঁড়ালেন। তিনি তার বক্ষ, দু’বাহু ও দু’হাতের তালু সম্প্রসারিত করে কা‘বাঘরের ওপর রাখলেন। অতঃপর বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাকে এমনটি করতে দেখেছি। শায়খ আলবানী বলেন, রুকনে ইয়ামেনী ও দরজার মাঝখানে লেগে থাকার অংশটুকু প্রমাণিত আছে। সাহাবায়ে কিরাম মক্কায় এসে মুলতাযামে যেতেন এবং সেখানে দু’হাতের তালু, দু’হাত, চেহারা ও বক্ষ রেখে দোয়া করতেন। বিদায়ী তাওয়াফের পূর্বে বা পরে অথবা অন্য যেকোনো সময় মুলতাযামে গিয়ে দো‘আ করা যায়।

ইবন তাইমিয়া (রহঃ) বলেন, ‘যদি সে ইচ্ছা করে হাজরে আসওয়াদ ও দরজার মধ্যবর্তী স্থান মুলতাযামে আসবে। অতপর সেখানে তার বক্ষ, চেহারা, দুই বাহু ও দুই হাত রাখবে এবং দোয়া করবে, আল্লাহর কাছে তার প্রয়োজনগুলো চাইবে, তবে এরূপ করা যায়। বিদায়ী তাওয়াফের পূর্বেও এরূপ করতে পারবে। মুলতাযাম ধরার ক্ষেত্রে বিদায়ী অবস্থা ও অন্যান্য অবস্থার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আর সাহাবীগণ যখন মক্কায় প্রবেশ করতেন তখন এরূপ করতেন। (ইবন তাইমিয়া, মাজমু‘ ফাতাওয়া ২৬/১৪২)।

লক্ষণীয়ঃ বর্তমান যুগে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ে মুলতাযামে যাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই সুযোগ পেলে সেখানে যাবেন। অন্যথায় যাওয়ার দরকার নেই। কেননা মুলতাযামে যাওয়া তাওয়াফের অংশ নয়। তাওয়াফের সময় তা করা যাবে না। তাওয়াফ শেষে এই মুস্তাহাব আমল করা যেতে পারে, তবে হজ্জের মৌসুমে এত ভীড় থাকে যে এই কাজ করা খুবই কষ্ট সাধ্য ব্যাপার।

১০। মাতাফঃ 

কাবাঘরের চারদিকে অবস্থিত তওয়াফের স্থানকে ‘মাতাফ’ বা চত্বর বলা হয়। মূলত তাওয়াফের জন্য ব্যবহৃত হলেও জামাতের সময় হলে এই স্থানে সালাত আদায় করা হয়। সালত শেষে পুনরায় তাওয়াফ শুরু হয়। পূর্বে যমযম  কূপ মাতাফেই অবস্থিত ছিল। পরে ভূপৃষ্ঠ থেকে কূপের অংশ সরিয়ে নেয়া হয় এবং পাম্পের সাহায্যে পানি উত্তোলন শুরু হয়। বর্তমানে এই ব্যবস্থা রয়েছে।

১১। মিযাবে রহমতঃ

কাবাঘর ধোওয়া হলে বা বৃষ্টি বর্ষিত হলে, ছাদের পানি এ জায়গা দিয়ে প্রবাহিত হয়। বায়তুল্লাহর উত্তর দিকের ছাদে (হাতিমের মাঝ বরাবর) যে নালা বসানো আছে, তাকে ‘মিযাবে রহমত’ বলা হয়। সাধারণত এই নালা দিয়ে ছাদের বৃষ্টির পানি পড়ে।

১২. রুকনঃ

রুকনের অর্থ হলো, স্তম্ভ। হজ্জের রুকনের অর্থ হজ্জের স্তম্ভগুলো। যার ওপর হজ্জের ভিত্তি। এর কোনোটি বাদ গেলে হজ্জ আদায় হয় না।

১৩। . শাযারওয়ানঃ

ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সময় কাবার দুটি দরোজা ছিল। কুরাইশ গোত্র যখন কাবা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তখন তারা হালাল অর্থের সংকটের কারণে একটি দরজা নির্মাণ করে। কিছু অংশ রেখে দেয়। সেই অংশটাই হজ্জরে ইসমাঈল নামে পরিচিত। অনির্মিত অংশের খানিকটা মূল ভিত্তিমূলের মাঝেও রয়েছে। যা বর্তমানে শাযারওয়ান নামে পরিচিত। কা‘বার ভিত্তিমূলের কাছাকাছি, দেয়াল লাগোয়া অংশটাই শাযারওয়ান।

১৪। বাইতুল্লাহর চারটি কোনার চারটি নামঃ

ক। রুকনে হজ্জরে আসওয়াদঃ কাবার যে কোনায় হজ্জরে আসওয়াদ বা কালো পাথর পাথর আছে, সেই কোনাকে রুকনে হজ্জরে আসওয়াদ বলা হয়। এই কোনা থেকেই তাওয়াফ  শুরু ও শেষ করতে হয়।

খ। রুকনে ইরাকিঃ হজ্জরে আসওয়াদ পর তাওয়াফ শুরু করলে প্রথম যে কোনা পড়বে তাকে রুকনে ইরাকি বলে। অর্থাৎ বাইতুল্লাহর পূর্ব-উত্তর কোনাকে রুকনে ইরাকি বলা হয়। এর পরই কাবার অনির্মিত অংশ হাতিম।

গ। রুকনে শামিঃ হাতিম অতিক্রমের পর যে কোনা সামনে আসবে তাই হলো রুকনে শামি। অর্থাৎ বাইতুল্লাহর উত্তর-পশ্চিম কোনাকে রুকনে শামি বলা হয়।

রুকনে ইয়ামানিঃ বাইতুল্লাহর পশ্চিম-দক্ষিন কোনাকে রুকনে ইয়ামানি বলা হয়। এই সম্পর্কে পূর্বে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা)

One thought on “বাইতুল্লাহ বিভিন্ন অংশের বর্ণনাঃ চতুর্থ কিস্তি

Leave a comment