মুযদালিফা থেকে মিনা যাত্রা কালে সুন্নাহ

মুযদালিফা থেকে মিনা যাত্রা কালে সুন্নাহ

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন

মুযদালিফা থেকে মিনা যাত্রা কালে সুন্নাহ হলোঃ

১। সূর্য উঠার আগেই মুজদালিফা হতে মিনার উদ্দেশ্যে রাওয়ানা হতে হবে

২। দুর্বল ব্যক্তিদের আগেভাগে মুযদালিফা ত্যাগ কার জায়েয

৩। মুজদালিফা থেকে মিনার উদ্দেশ্যে ধীর স্থিরভাবে চলতে হবে

৪। ওয়াদী মুহাসসির নামক স্থানে দ্রুত চলা

৫। বড় জামারায় পৌছার পর তালবিয়া পাঠ বন্ধ করা

১। সূর্য উঠার আগেই মুজদালিফা হতে মিনার উদ্দেশ্যে রাওয়ানা হতে হবেঃ

ফজরের সালাত আদায় না করা পর্যন্ত মুযদালিফায় থাকতে হবে। তাই আউয়াল ওয়াক্তে ফজরের সালাত আদায় করতে হবে। ফজরের সালাত শেষে  তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল, তাকবীর ও দোয়া শেষ করে, আকাশ ফর্সা হয়ে গেলে সূর্য উঠার আগেই মিনায় রওয়ানা দেবেন। প্রচন্ড ভীড়ের কারণে ট্রাফিক জামের দরুন বাসের অপেক্ষা না করে পায়ে হেঁটে রওয়ানা দেয়াই ভাল। জাহিলী যুগের লোকেরা মুজদালিফা হতে মিনার উদ্দেশ্যে রাওয়ানা জন্য সূর্য উঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের বিপরীত শিক্ষা আমাদের দিলেন এবং তিনি সূর্য উঠার আগেই রওয়ানা হলেন।

দলিলঃ

১. আমর ইব্‌নু মায়মূন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি, ‘উমর (রাঃ) -এর সাথে ছিলাম। তিনি মুযদালিফাতে ফজরের সালাত আদায় করে (মাশ‘আরে হারামে) উকূফ করলেন এবং তিনি বললেন, মুশরিকরা সূর্য না উঠা পর্যন্ত রওয়ানা হত না। তারা বলত, হে সাবীর! আলোকিত হও। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের বিপরীত করলেন এবং তিনি সূর্য উঠার আগেই রওয়ানা হলেন। (সহিহ বুখরি ১৬৮৪)

২. ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, সূর্য উঠার আগেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মুযদালিফা হতে) যাত্রা করেন।  (সুনানে তিরমিজি ৮৯৫ হাদিসের মান সহিহ)

৩. আমর ইবনু মাইমূন (রহঃ) বলেন, আমরা মুযদালফায় অবস্থানরত ছিলাম। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) তখন বললেনঃ সূর্য না উঠা পর্যন্ত মুশরিকরা এখান হতে রাওয়ানা হত না। তারা বলতঃ হে সাবির। আলোকিত হও। কিন্তু তাদের বিপরীত নীতি অনুসরণ করেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অতঃপর সূর্য উঠার পূর্বেই উমর (রাঃ)-ও রাওয়ানা হন। (সুনানে তিরমিজি ৮৯৬ হাদিসের মান হাসান সহিহ)

৪. আমর ইবনে মায়মুন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এর সাথে হজ্জ করেছি। আমরা যখন মুযদালিফা থেকে প্রত্যাবর্তন করলাম তখন তিনি বলেন, মুশরিকরা বলতো, হে সাবীর (মুযদালিফার একটি পাহাড়)! উজ্জ্বল হও, আমরা প্রত্যাবর্তন করবো। তারা সূর্য না উঠা পর্যন্ত (মুযদালিফা থেকে) প্রত্যাবর্তন করতো না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বিপরীত আমল করেন এবং সূর্যোদয়ের পূর্বে (মিনার উদ্দেশ্যে) রওয়ানা করেন। (ইবনে মাজাহ ৩০২২, নাসাঈ ৩০৩৭)

৫. আমর ইবনু মায়মূন (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ‘উমর (রাঃ)-এর সাথে ছিলাম। তিনি মুযদালিফাতে ফজরের সালাত আদায় করে (মাশা’আরে হারামে) উকুফ করলেন এবং তিনি বললেন, মুশরিকরা সূর্য না উঠা পর্যন্ত রওয়ানা হত না। তাঁরা বলত, হে সাবীর! আলোকিত হও! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের বিপরীত করলেন এবং তিনি সূর্য উঠার আগেই রওয়ানা হলেন। (সহিহ বুখারী ১৫৭৯ ইফাঃ)

২। দুর্বল ব্যক্তিদের আগেভাগে মুযদালিফা ত্যাগ কার জায়েযঃ

দুর্বল নারী ও শিশু এবং অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য অর্ধ রাত্রির পর মুযদালিফা থেকে মিনায় চলে যাওয়া জায়েয হবে। দুর্বল ও অসুস্থদের সাহায্যার্থে তাদের সাথে সুস্থ অভিভাবকরাও যেতে পারবে। এরূপ ওযর ছাড়া মুযদালিফায় ফজর আদায় না করে কারো মিনায় চলে যাওয়া ঠিক হবে না। চলে গেলে দম দিতে হবে।

দলিলঃ

১. আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মুযদালিফায় অবতরণ করলাম। মানুষের ভিড়ের আগেই রওয়ানা হওয়ার জন্য সওদা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে অনুমতি চাইলেন। আর তিনি ছিলেন ধীরগতি মহিলা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে অনুমতি দিলেন। তাই তিনি লোকের ভিড়ের আগেই রওয়ানা হলেন। আর আমরা সকাল পর্যন্ত সেখানেই রয়ে গেলাম। এরপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রওয়ানা হলেন, আমরা তাঁর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। সওদার মত আমিও যদি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট অনুমতি চেয়ে নিতাম তাহলে তা আমার জন্য হতে অধিক সন্তুষ্টির ব্যাপার হতো।(সহিহ বুখারি ১৬৮১, সহিহ মুসলিম ৩০০৯)

২. আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সওদা (রাঃ) মুযদালিফার রাতে (মিনা যাওয়ার জন্য) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট অনুমতি চাইলেন, তিনি তাঁকে অনুমতি দেন। সওদাহ (রাঃ) ছিলেন ভারী ও ধীরগতিসম্পন্না নারী। (সহিহ বুখারি ১৬৮০)

৩. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে মালপত্রের সাথে মুযদালিফা হতে রাত্রিকালে প্রেরণ করেছিলেন। (সহিহ বুখারি ১৮৫৬)

৪. ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পরিবারের মধ্যে দুর্বলদের (মুযদালফা হতে মিনায়) আগেই পাঠিয়ে দেন। আর তিনি বলেদেনঃ তোমরা সূর্য না উঠা পর্যন্ত (জামরায়) কংকর নিক্ষেপ করবে না। (সুনানে তিরমিজ ৮৯৩, আবু দাউদ ১৯৪১)

৫. ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারে যেসব দুর্বল লোকেদের (মুযদালিফা থেকে মিনায়) আগেভাগে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩০২৬)

৬. ফযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ হাশিমের দুর্বলগণকে আদেশ করেন যে, তারা যেন মুযদালিফা থেকে আগে ভাগে চলে যায়।(সুনানে নাসাঈ ৩০৩৭)

মন্তব্যঃ বীনা ওজরে আগেভাগে চলে যাওয়া সঠিক কাজ নয়। যদি কেউ আগেভাগে মিনায় গিয়ে ফজরের সালাত আদায় করে তবে তাকে দম দিতে হবে।

৩। মুজদালিফা থেকে মিনার উদ্দেশ্যে ধীর স্থিরভাবে চলতে হবেঃ

১. আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লোকদের উদ্দেশ্যে বললেন, যখন তারা সন্ধ্যায় আরাফা ও সকালে মুযদালিফা ত্যাগ করেন, তোমরা ধীর-স্থিরভাবে চল। তখন তিনি তার উটনীর লাগাম টেনে রাখেন। এরপর যখন তিনি মিনায় প্রবেশ করেন তখন তিনি অবতরণ করেন। ‘মুহাসসির’ নামক স্থানে তিনি বলেন : তোমরা ‘খায়ক’ (দুই আংগুলে মারার ছোট) কংকর সাথে নাও, যা জামরায় মারতে হবে। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাতে ইঙ্গিত করে বলেন, যেরূপ কংকর মানুষ সাধারণত মেরে থাকে। (সুনানে নাসাঈ ৩০৫৮)

২. জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজ্জে ধীরেসুস্থে (মুযদালিফা থেকে) রওয়ানা করেন এবং লোকেদেরও শান্তভাবে রওয়ানা হতে বলেন। (মিনায় পৌঁছার পর) তিনি তাদের নির্দেশ দেন যে, তারা যেন ক্ষুদ্র কাঁকর নিক্ষেপ করে। তিনি নিজে (মুযদালিফা ও মিনার মাঝখানে অবস্থিত) ওয়াদী মুহাসসির দ্রুত অতিক্রম করেন এবং বলেনঃ আমার উম্মাত যেন হজ্জের অনুষ্ঠানাদি শিখে নেয়। কারণ এ বছরের পর হয়তো আমি তাদের সাথে মিলিত হতে পারবো না। (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩০২৩)

৪। ওয়াদী মুহাসসির নামক স্থানে দ্রুত চলাঃ

চলার সময় বেশী বেশী লাববাইকা অর্থাৎ তালবিয়াহ ও আল্লাহু আকবার পড়তে থাকবেন। ওয়াদি মুহাস্সির নামক স্থানে পৌঁছলে সামান্য দ্রুত গতিতে হাঁটা মুস্তাহাব, যদি অন্য মানুষকে কষ্ট দেয়া ছাড়া এটি করা যায়, তবেই তা করবেন। ‘‘ওয়াদী মুহাস্সির’’ নামক জায়গাটি মুযদালিফা ও মিনার মধ্যবর্তী একটি উপত্যকার নাম।

দলিলঃ

১. জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়াদী মুহাসসারে তার উট দ্রুত হাঁকিয়ে যান। এই হাদীসে বিশর আরো উল্লেখ করেন যে, তিনি শান্তভাবে মুযদালিফা হতে ফিরে আসেন এবং লোকদেরকেও শান্তভাব অবলম্বনের হুকুম দেন। আবূ নুআইম আরো বর্ণনা করেনঃ তিনি নুড়ি পাথর (জামরায়) ছুঁড়ে মারার হুকুম দেন এবং বলেনঃ এই বছরের পর হয়ত আমি আর তোমাদের দেখা পাব না। (সুনানে তিরমিজ ৮৮৬)

২. জা’ফর ইবন মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, আমি জাবির ইবন আবদুল্রাহ্ (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁকে বললামঃ রাসূলুল্রাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হজ্জ সম্বন্ধে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেনঃ রাসূলুল্রাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বেই মুযদালিফা ত্যাগ করেন এবং ফযল ইবন আব্বাসকে তাঁর বাহনে তাঁর পেছনে বসিয়ে নেন, মুহাস্সিরে এসে তিনি তাঁর বাহনকে দ্রুতগতিতে পরিচালনা করেন। পরে তিনি সে পথ ধরে চলেন যা তোমাকে জামরায় কুবরায় (বড় শয়তান) পৌঁছে দেবে। এরপর তিনি বৃক্ষের নিকটের জামরায় উপনীত হন এবং সেখানে সাতটি কংকর নিক্ষেপ করেন। তিনি এগুলোর প্রত্যেকটি নিক্ষেপের সময় তাকবীর বলেন। তিনি (কংকর) নিক্ষেপ করেন উপত্যকার নিম্নভূমি থেকে। (সুনানে নাসাঈ ৩০৫৪)

৩. জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুযদালিফা হতে শান্তভাবে রওয়ানা হলেন এবং লোকদেরকে ছোট কংকর মারার নির্দেশ দিলেন। তিনি দ্রুত গতিতে মুহাসসির উপত্যকা অতিক্রম করেন। (আবু দাউদ ১৯৪৪)

৫। বড় জামারায় পৌছার পর তালবিয়া পাঠ বন্ধ করাঃ

মিনায় পৌছরা পর যখই বড় জামারায় পৌছাবেন, সাথে সাথে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করে দেবেন।

দলিলঃ

১. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ‘আরাফাহ হতে মুয্দালিফা পর্যন্ত একই বাহনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) উপবিষ্ট ছিলেন। এরপর মুযদালিফা হতে মিনা পর্যন্ত ফযল [ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)]-কে তাঁর পিছনে আরোহণ করান। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তাঁরা উভয়ই বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামরা আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপ করা পর্যন্ত তালবিয়া পাঠ করছিলেন। (সহিহ বুখারি ১৫৪৩)

২. ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুযদালিফা হতে মিনা পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে তার বাহনের পিছনে বসিয়ে এনেছেন। জামরা আকাবায় কংকর মারা পর্যন্ত তিনি অনবরত তালবিয়া পাঠ করেন। (সুনানে তিরমিজি ৯১৮)

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুযদালিফায় ফায্লকে বাহনে তাঁর পিছনে বসালেন। রাবী বলেন, এরপর ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) আমাকে অবহিত করলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামরাতুল ‘আক্বাবায় পাথর নিক্ষেপের পূর্ব পর্যন্ত অনবরত তালবিয়াহ্ পাঠ করতে থাকেন। (সহিহ মুসলিম ২৯৭৯)

কিছু পরামর্শঃ মুজদালিফায় জায়গা বাড়ে নাই বেড়েছে হাজিদের সংখ্যা। তাই ঘুমানোর জন্য পর্যাপ্ত পাওয়া যায় না। বিছানা বিছানোর মত কোন সুবিধাজনক স্থান পেলেই সালাত আদায়ের সাথে সাথে ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে। তবে বালু ও ছোট ছোট পাথরের কনা প্রচুর বিধায় ঘুমান কষ্টকর। মহান আল্লাহর ইবাদাতের কথা মনে করে, বালু কণা আর পাথরের টুকরা যাই থাকুক এরই উপর একটি মাদুর বিছিয়ে খোলা আকাশের নীচে শুয়ে পড়বেন। এখানে প্রায় স্থানেই অজু ও টয়লেটের ব্যবস্থা আছে তার পরও সারা রাত প্রতিটি টয়লেটের সামনে দীর্ঘ লাইন লেগেই থাকে। এজন্য পানি কম খাওয়া ভাল। মুজদালিফা থেকে পায়ে হেঁটে মিনায় পৌঁছতে হবে। গাড়িতে মিনা যাওয়ার কল্পনা করা যায় না। কেননা মানুষের ভিড়ে বাস্তায গাড়ী চলাচলের সুযোগ তাকে না বললেই চলে।

এই দিন সরাসরি মিনায় পাথর নিক্ষেপের জন্য জামারাতে না গিয়ে তাবুতে যাওয়া ভাল। সকলে সবাই জামারাতে যাওয়া চেষ্টা করে বিধায় বিশাল ভিড় লেগে যায়। সকাল ১০/১১ টার দিকে ভিড় একটু কমে যায়। মিনায় তাঁবুতে পৌঁছে নাস্তা খেয়ে একটু বিশ্রাম করে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে কংকর নিক্ষেপ করতে যেতে পারেন। মিনায় তাবুতে পৌছাতে হবে আপনাকে সঠিক লোকেশন জানতে হবে। তাই মুয়াল্লীমকে হাত ছাড়া করা চলবে না। সাথে সাথে নিজের নোটবুকে লিখে রাখুন, কত নম্বর খুঁটির নিকটে মিনায় আপনার তাঁবু। কারণ এখান থেকে হারিয়ে গেলে জনরাশির মহাস্রোতে আপনাকে খুঁজে বের করা খুব দুরহ।

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা)

One thought on “মুযদালিফা থেকে মিনা যাত্রা কালে সুন্নাহ

Leave a comment