বিভিন্ন দিবস কেন্দ্রিক বিদআত প্রথম কিস্তি : দিবস উদযাপনের শর্ত

দিবস উদযাপনের শর্ত

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন।

১। দিবস উদযাপনের শর্তঃ

দেশ বিদেশে বিভিন্ন দিবস খুব ঘটা করে উদযাপন করা হয়। জাতীয় বা আন্তরজাতীকভাবেও বিভিন্ন দিবস উদযাপন করা হয়। ইসলামি শরীয়তেও বিভিন্ন দিবস বা মাসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ইবাদাত করা হয়। যেমন- রমজান এবং জিলহজ্জ মাসকে কেন্দ্র করে বিশেষ ইবাদাত করা হয়। লাইলাতুল কদর, আরাফাতের দিন, ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার দিন বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। একটু লক্ষ করলেই দেখা যায় অনেক মুসলিম কম বেশী ইসলামি শরীয়তের বাহিরের দিবসগুলিও খুব গুরুত্ব দিয়া উদযাপন করে থাকে। ইসলামি শরীয়তে নেই, এমন দিবস উদযাপন করা ইসলাম কতটুকু সমর্থন করে?

কুনআন সুন্নাহর বাহিরে কোন দিবস উদযাপন ক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ বিধান প্রযোজ্য। কোন কোন দিবস উদযাপন করা হারাম, আবার কোনটি জায়েয। দিবস উদযাপন করার ক্ষেত্রে দিবসটির সমাগ্রিক কার্যলাপের উপর নির্ভর করবে। এই হিসাবে দিবসটির উৎযাপনের কার্যকালের জন্য শির্ক, কুফরী, বিদআত, হারাম এবং জায়েয হতে পারে। বিদআতের পরিচিতির আলোচায় দেখেছি যখন কোন নতুন কাজ দুনিয়ায় সাথে সংশ্লিষ্ট হয়, তখন আর কাজটি বিদআত হয় না। দুনিয়ায় সাথে সংশ্লিষ্ট ঐ নতুন কাজটি হয় হারাম, না হয় জায়েয হবে। এমন অনেক দিবস আছে, যা উদযাপন করা শুধুই দুনিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট দ্বীন সাথে নয়, তখন ঐ দিবসটি উদযাপন করা করা হয় হারাম আর না হয় জায়য হবে। কিন্তু যখন দিবসটি উদযাপন করা ইবাদাত মনে করবে তখনতো বিদআত হবেই। দিবস উদযাপন করা বিদআত হবে কি না তা নির্ধানের জন্য কিছু শর্ত আছে। ঐ শর্তের বাহিরে গেলেই উদযাপন করা করা হয় হারাম না হয় বিদআত হবে। কাজেই দিবস উদযাপন করার আগে এই শর্ত সম্পর্কে জেনে নেই। সাধারণত দিবস উদযাপন করার ক্ষেত্রে নিম্মবর্ণিত শর্থগুলি খেয়াল রাখতে হবে।

১। কুনআন সুন্নাহে নাই, এমন দিবস উদযাপন করাকে ইবাদাত মনে করা যাবে না।

২। দিবস উদযাপন করার ক্ষেত্রে কুফরি আকিদা প্রষোণ করা করা যাবে না।

৩। দিবস উদযাপন করার সময় ইসলাম বহির্ভূত হারাম কাজ লিপ্ত হওয়া যাবে না।

৪। দিবস উদযাপন করার ক্ষেত্রে অর্থের অপচয় করা যাবে না।

৫। বিধর্মীদের অনুসকরণে কোন দিবস উদযাপন করা যাবে না।

উপরের শর্তগুলির আলোকেই দিবস উদযাপন করা জায়েয হতে পারে। বিষয়টি একটু খুলে বলা যাক।

 

২। দিবস উদযাপন করাকে দ্বীন মনে করাঃ

কুনআন সুন্নাহে নাই, এমন দিবস উদযাপন করাকে ইবাদাত মনে করে উদযাপন করা হয়। বিদআতের আলোচনায় মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আমাদের সমাজে বহু দিবস দ্বীন মনে করে উদযাপন করা হয় যার কোন ভিত্তি ইসলামে নেই। এই রকম দ্বীনে কিছু উদ্ভাবন করাই বিদআত যা মুমিনকে জাহান্নামে নিয় যাবে। যেমনঃ

আয়িশাহ রাদিয়াল্লাহ তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি কেউ আমাদের এই দ্বীনে কিছু উদ্ভাবন করে যা তাতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (সহিহ বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ১৭১৮, আবূ দাঊদ ৪৬০৬, আহমাদ ২৩৯২৯)

দ্বীন নাই অথচ দ্বীন মনে করে বহু আমল আবিস্কার করেছে জান্নাত পাগল মুমিন। যেমনঃ নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জম্ম দিবস উদযাপন করা হয় “ঈদে মীলাদুন্নবী” নাম ধারণ  করে। নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মিরাজকে কেন্দ্র করে “শবে মিরাজ” বা “লাইলাতুল মিরাজ” উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন অলী আওলীয়াদের মৃত্যু বার্ষিকীতে তাদের মাজারে উরশ উদযাপন করা হয়। সাধারণ মুসলীম নর নারীদের মৃত্যু বার্ষিকী এবং চল্লিশার নামে দিন ক্ষন ঠিক করে পালিত হয় মৃত্যু বার্ষিকী এবং চল্লিশা পালন করা হয়। এমনিভাবে আশুরা এবং শাবানের ১৫ তারিখের রজনীও মুসলিম সমাজে ইবাদাত মনে করে উদযাপন করা হয়। এই সকল দিবস উদযাপন করার কোন ভিত্তি ইসলামি শরীয়তে নাই কিন্তু বিদআতীগন ইহাকে দ্বীন মনে করে নেকীর আশায় উদযাপন করে। মন রাখতে হবে, কুনআন সুন্নাহে নাই, এমন দিবস উদযাপন করাকে ইবাদাত মনে করা যাবে না।

 

৩। দিবসের উৎযাপনের সাথে কুফরী আকিদা রাখাঃ

এমন অনেক দিবস আছে যেগুলির সাথে ইসলামী শরীয়তের কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা নাই এবং কেউ ইবাদাত মনে করেও এই সকল দিবস উদযাপন করে না। কিন্তু ঐ দিবসটি উদযাপনের সাথে সাথে কুফরী আকিদা প্রষোণ করে থাকে।  আমাদেশে দেশে প্রতি বছর বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়। অনেক এই কুফরী আকিদা রাখে যে বছরের প্রথম দিন যেমন যাবে সারা বছর ঠিক তেমন যাবে। তাই তারা বছরের প্রথম দিন ভাল ভাল পোশাক করে, ভালো ভালো খাবার খায়। প্রতি বছর নববর্ষের একটি করে কুফরী আকিদা নিয়ে উৎযাপিত হয়। যেমনঃ বলা হয়ঃ এ বছর  মা দূর্গা হাতিতে চড়ে এসেছেন, তাই এবার ফসল ভাল হবে।

 

৪। দিবস উদযাপনের সাথে সাথে হারাম কাজ লিপ্ত হওয়াঃ

এমন অনেক দিবস আছে যার সাথে ইসলামে ইবাদাতে কোন সম্পর্ক নাই। দিবসটি উদযাপন করাকে ইবাদাত মনে করে না। ইহার দ্বারা কোন খারাপ আকিদাও প্রষোণ করে না। কিন্তু এই দিবস উৎযাপনের সাথে সাথে বহু হারাম কাজ লিপ্ত হতে হয়। অর্থাৎ দিবসটির সাথে হারাম হালালের সম্পর্ক আছে। যেমনঃ আন্তরজাতীক নারী দিবস। এই দিবস উদযাপন করার জন্য হাজার হাজার মহিলা পর্দাকে উপেক্ষা করে বাহিরে আসে। নারীর পর্দার ফরজকে উপেক্ষা করে ইহাতে অংশ গ্রহন হারাম। অথচ মহান আল্লাহ বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا

হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সুরা আহযাব ৩৩:৫৯)

‘আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস’ এর কথাই ধরুন, নারীর নৃত্য মানে কি সবার জানা। কোন দেশের বা অঞ্চলের সংস্কৃতি হলেও ইসলামি শরীয়তে ইহা যে হারাম তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ঠিক তেমনভাবে “বিশ্বভালবাসা দিবস” উদযাপন করা মানে নারী অবাধ মেলামেসাকে সমর্থন প্রদান করা। এই দিবস উদযাপন করা করার অর্থ হবে নিজেকে হারাম কাজে সম্পৃক্ত করা। আপনাকে কোন আলেম হতে হবে না, একটু চোখ কান খোলা রাখলেই ইসলামি শরীয়ত বিরোধী দিবস যা হারাম কাজের জম্মদের তা অনায়াসে চিনতে পারবেন। আমলের যেমন নির্দষ্ট নিয়ম কারন আছে ঠিক তেমনি প্রতিটি কাজের মাঝে ইসলামি শরীয়তের নির্দিষ্ট বীধি বিধান আছে। এই বীধি বিধানের বাহিরে কোন কাজ করলে কাজটি হারাম হয়। কাজেই কোন দিবস উদযাপন করতে গিয়ে যদি ইসলামি শরীয়তের এই বীধি বিধানকে উপেক্ষা করে হারামে লিপ্ত হতে হয়, তবে দিবসটি উদযাপন করা যে হারাম হবে।

 

৫। দিবস উদযাপনে শুধু অর্থের অপচয় করাঃ

মহান আল্লাহ বলেন,

*إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُواْ إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا*

নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। ( সুরা বনী-ইসরাঈল ১৭:২৭)।

এমন অনেক দিবস আছে যার কোন উপকারীতা নাই শুধু্ই অর্থের অপচয়। যেমনঃ জম্ম দিন, জাতীয় শিক্ষক দিবস, সুন্দরবন দিবস, কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, মহান শিক্ষা দিবস, কন্যা শিশু দিবস, জাতীয় যুব দিবস, এই রকম বহু দিবস আছে যার কারনে সমাজের কোন উপকার হয় না, দিবসটি উৎযাপনে শুধু অর্থের অপচয় হয়। এই সকল দিবস পালনে ইসলামের সাথে সম্পর্ক না থাকলেও অপচয় করার জন্য হারামে পরিনত্ হয়।

ইংরেজী নববর্ষে শুধু আতশবাজীর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার আগুন-পটকা ফোটানোর মাধ্যমে খরচ করে থাকে। এই অপচয় এখন আর ধনী দেশগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। পৃথিবীর বহু দেশ এখন এই অপচয়ের সাথে যু্ক্ত।  আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশর মানুষও নানা অপকর্মের আর অপচয়ের মাধ্যমে দিনটি পালন করে।

 

৬। বিধর্মীদের অনুসকরণে দিবস উদযাপন করাঃ

মহান আল্লাহ বলেন,

*وَلَا تُطِعِ الْكَافِرِينَ وَالْمُنَافِقِينَ وَدَعْ أَذَاهُمْ وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ وَكِيلًا*

আপনি কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের উৎপীড়ন উপেক্ষা করুন ও আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ কার্যনিবার্হীরূপে যথেষ্ট। (সুরা আহযাব ৩৩:৪৮)

কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “যে কোন কওমের সাথে সামঞ্জস্য রাখল, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত”। (সুনানে আবু দাউদ, আহমদ)

উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠলো যে কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারা, বৌদ্ধ, হিন্দুসহ কোন অমুসলিমদের অনুসরণ করা জায়িয নেই। কিন্তু এমন অনেক দিবস আছে যে দিবসগুলি উদযাপন করে থাকি অমুসলিমদের অনুসরণের মাধ্যমে। যে দিবস কখনও মুসলিমদের দ্বার সৃষ্ট হয় নাই। যার প্রতিটি ছত্রই আবিস্কার করছে অমুসলিম জাতী। যেনমঃ প্রতি বছর জানুয়ারীর প্রথম দিন ইংরেজী নববর্ষ হিসাবে পশ্চিমা জাতী খুব ঘটা করে উদযাপন করে থাকে। তাদের দেখা দেখি অনেক মুসলমানে সন্তানেরাও আজ ঘটা করে ইংরেজী নববর্ষ উদযাপন করা করে থাকে।

অনুরূপভাবে খৃষ্টানগণ প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর ঈসা আলাইহিস সালামের জম্ম দিন ধরে বড় দিন হিসবে উদযাপন করে। হিন্দুরা শ্রী শ্রী কৃষ্ণের জন্ম দিন হিসাব করে জম্মাষ্টি পালন করে। এদের দেখা দেখি আজ বিদআতি মুসলিমগন নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জম্ম দিবস হিসাব করে “ঈদে মীলাদুন্নবী” পালন করে।

মন্তব্যঃ এই পাঁচটি শর্তের বাহিরে কোন দিবস উদযাপন করা হারাম নয়, বরং জায়েয। যেমনঃ জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস, জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস, নিরাপদ সড়ক দিবস,  বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস, মাদক বিরোধী দিবস ইত্যাদি। এই সকল দিবসে যদি অপচয় রোধ করে বা কোন প্রকার শরীয়ত বিরোধী কাজ না করে যদি জন সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করা হয় তবে শুধু জায়েয হবে না বরং বড় সওয়াবের কাজ হবে।

 

৭। বিভিন্ন দিবসের নামঃ

জাতীয় ও আন্তর্জাতীকভাবে এত দিবস উদযাপন করা হয় যে হিসাব রাখা খুবই কঠিন। এই বিশাল তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করাও সম্ভব নয়। এ সকল দিবস সম্পর্কে জ্ঞান রাখাও জরুরী নয়। তারপরও একটা সাধারণ ধারনা প্রদানের জন্য পাঠকদের নিকট এই দিবসগুলোর একটি তালিকা উল্লেখ করছি। যারফলে পাঠকবৃন্দ এ সম্পর্কে কিছু ধারনা নিতে পারে। আমাদের আলোচনার বিষয় হলো বিদআত তাই এই দিবসগুলির মাঝে যেগুলো আমাদের শরীয়ত বিরোধী কাজ করাতে উৎসাহ দেন তা থেকে নির্দিষ্ট কয়েকটা আলোচন করব ইনশাল্লাহ।   

দিবসগুলোর তালিকা তিনটিভাগে উল্লেখ করছি, প্রথমভাগে বাংলাদেশের দিবসগুলো, দ্বিতীয় ভাগে বিশ্ব বা আন্তর্জাতিক দিবসগুলো এবং শেষের দিকে আন্তর্জাতিক দিবস যা জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত সেগুলো উল্লেখ করব। আমাদের দেশে অধিকাংশই দিবসগুলো প্রায় নিয়মিত পালিত হয়। কিন্তু কিছু কিছু দিবস, বিভিন্ন রাজনৈতিক কারনে পালিত হয়, আবার কখনও রাজনৈতিক কারনে পালিত হয় না। আন্তর্জাতিক ও বৈশ্বিক দিবসগুলোর জন্য সরকারি ও আন্তর্জাতিকভাবে অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার প্রেক্ষিতে তা পালিত হয়। দিবস পালনের ব্যাপ্তিও অর্থ প্রাপ্তীর উপর নির্ভর করে থাকে। অর্থ বেশী পেলে জাকযমক বেশী হয়, আবার অর্থ কম পেলে জাকযমক কম হয়।

৮। বাংলাদেশের দিবসঃ

এই দিবসগুলো শ্রেফ বাংলাদেশেই পালিত হয়। অবশ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসি বাঙালিরাও এই দিবসগুলো সীমিতাকারে পালন করে থাকেন।

 

তারিখ দিবসের নাম তারিখ দিবসের নাম
১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস  ২৩ জুন পলাশী দিবস 
১৯ জানুয়ারি জাতীয় শিক্ষক দিবস  ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস 
২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদ দিবস  ৩ জুলাই জন্ম নিবন্ধন দিবস :
২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান দিবস  ১৫ আগষ্ট শোক দিবস 
২৫ জানুয়ারি কম্পিউটারে বাংলা প্রচলন দিবস  ২৭ আগস্ট দিঘলিয়ার দেয়াড়া গণহত্যা দিবস 
৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ১৭ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষা দিবস :
১১ ফেব্রুয়ারি সড়ক হত্যা দিবস ১৮ সেপ্টেম্বর কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস 
১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস  ২৩ সেপ্টেম্বর প্রীতিলতার আত্মাহুতি দিবস
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ২৯ সেপ্টেম্বর মাহমুদপুর গণহত্যা দিবস 
২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস ৩০ সেপ্টেম্বর কন্যা শিশু দিবস
১ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবস   ২ অক্টোবর পথশিশু দিবস বা সুবিধাবঞ্চিত শিশু দিবস  
২ মার্চ জাতীয় পতাকা দিবস  ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবস 
৬ মার্চ জাতীয় পাট দিবস ২২ অক্টোবর নিরাপদ সড়ক দিবস 
৮ মার্চ জাতীয় নারী দিবস ১ নভেম্বর জাতীয় যুব দিবস
১৭ মার্চ শিশু দিবস প্রথম শনিবার জাতীয় সমবায় দিবস 
২৩ মার্চ পতাকা উত্তোলন দিবস* ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস   ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস
৩১ মার্চ জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস*
২ এপ্রিল জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস  ১০ নভেম্বর নূর হোসেন দিবস বা স্বৈরাচার বিরোধী দিবস 
১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ  ২১ নভেম্বর সশস্ত্রবাহিনী দিবস 
১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবস ৩০ নভেম্ববর জাতীয় আয়কর দিবস
২৮ এপ্রিল জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস ১ ডিসেম্বর  মুক্তিযোদ্ধা দিবস
১ মে মহান মে দিবস  : ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস
১৬ মে ফারাক্কা লংমার্চ দিবস বা ফারাক্কা দিবস  ৮ ডিসেম্বর জাতীয় যুব দিবস 
২৩ মে জাতীয় নৌ নিরাপত্তা দিবস ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস
২৫ মে কবি কাজী নজরুল ইসলামের  জন্মবার্ষিকী   ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস
২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস   ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস
৭ জুন ছয় দফা দিবস ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস
১৩ জুন নারী উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধ দিবস বা ইভ টীজিং প্রতিরোধ দিবস  ১৯ ডিসেম্বর বাংলা ব্লগ দিবস

 

৯। বিশ্ব বা আন্তর্জাতিক দিবসঃ

বিশ্বের প্রায় সকল দেশে একই দিনে একই সাথে এই দিবসটি পালন করা হয়। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এই দিবসগুলি পালনের রীতি চালু আছে।  বিশ্ব দিবসাকে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

 

তারিখ দিবসের নাম তারিখ দিবসের নাম
জানুয়ারির শেষ রবিবার বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস
২ জানুয়ারি বিশ্ব জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ দিবস তৃতীয় রবিবার। বিশ্ব বাবা দিবস
২৬ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক কাস্টম্‌স দিবস ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস
২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব জলাভূমি দিবস ৮ জুন বিশ্ব ব্রেইন টিউমার দিবস
১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ডারউইন দিবস, ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস
১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস
১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস ১৭ জুন বিশ্ব মরুময়তা দিবস 
২১ ফেব্রুয়ারি  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ জুন বিশ্ব সঙ্গীত দিবস
২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব স্কাউট দিবস ২ জুলাই বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিকতা দিবস
২৪ ফেব্রুয়ারি:  আল কুদ্‌স দিবস ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস
দ্বিতীয় সোমবার কমনওয়েলথ দিবস প্রথম রবিবার বিশ্ব বন্ধু দিবস
৩ মার্চ বিশ্ব বই দিবস ১ আগস্ট বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ দিবস
৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস ৬ আগস্ট হিরোশিমা দিবস
১০ মার্চ বিশ্ব কিডনি দিবস ৯ আগস্ট নাগাসাকি দিবস
১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস  ৮ই সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস
১৪ মার্চ বিশ্ব পাই দিবস ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব নৌ দিবস
১৫ মার্চ পঙ্গু দিবস ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ব কারামুক্ত দিবস
 ১৫ মার্চ বিশ্ব ক্রেতা অধিকার দিবস ২৪ সেপ্টেম্বর মীনা দিবস
২০ মার্চ বিশ্ব শিশুনাট্য দিবস ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ব হার্ট দিবস
২১ মার্চ বিশ্ব বন দিবস ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস
২১ মার্চ বিশ্ব বর্ণবৈষম্য দিবস ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস
২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব কন্যা শিশু দিবস
২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস
২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস ১ অক্টোবর বিশ্ব নিরামিষ দিবস
২৬ মার্চ আর্থ আওয়ার ৪ অক্টোবর বিশ্ব প্রাণী দিবস
২৭ মার্চ বিশ্ব নাট্য দিবস ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস
২ এপ্রিল বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস
২ এপ্রিল বিশ্ব শিশু বই দিবস ১০ অক্টোবর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস
৪ এপ্রিল বিশ্ব মাইন বিরোধী দিবস ১৪ অক্টোবর বিশ্ব মান দিবস
৭ এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ১৪ অক্টোবর বিশ্ব দৃষ্টি দিবস
১৬ এপ্রিল বিশ্ব কণ্ঠ দিবস ১৫ অক্টোবর বিশ্ব সাদাছড়ি দিবস
১৭ এপ্রিল বিশ্ব হিমোফেলিয়া দিবস ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস
২২ এপ্রিল বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ২৪ অক্টোবর বিশ্ব তথ্য উন্নতকরণ দিবস
২৩ এপ্রিল বিশ্ব পুস্তক দিবস ৩১ অক্টোবর বিশ্ব মিতব্যয়িতা দিবস
২৪ এপ্রিল বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ আন্তর্জাতিক পোস্টকার্ড সপ্তাহ
২৫ এপ্রিল বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস অক্টোবরের প্রথম সোমবার বিশ্ব স্থাপত্য দিবস
২৬ এপ্রিল বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস অক্টোবরের প্রথম শুক্রবার বিশ্ব হাসি দিবস
২৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
২৭ এপ্রিল বিশ্ব নকশা দিবস ১২ নভেম্বর বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস
২৮ এপ্রিল বিশ্ব পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস ২০ নভেম্বর আফ্রিকার শিল্পায়ন দিবস
৩ মে বিশ্ব সাংবাদিকতা দিবস ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিন সংহতি দিবস
৮ মে বিশ্ব রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট দিবস ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইড্‌স দিবস
১৭ মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস ১১ ডিসেম্বর বিশ্ব পর্বত দিবস
১৮ মে: আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন বা যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন

 

১০। আন্তর্জাতিক দিবস যা জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতঃ

সাধারণত জাতিসংঘ কর্তৃক চালু করা ও উদযাপিত দিবসগুলোই “আন্তর্জাতিক দিবস” হিসেবে উদযাপিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশ, জাতিসংঘের অন্যতম সদস্য হিসেবে এই দিবসগুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে।

 

তারিখ দিবসের নাম তারিখ দিবসের নাম
২৫ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক শুল্ক দিবস: ১ অক্টোবর বিশ্ব শিশু দিবস
৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস: ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস
২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস অক্টোবর প্রথম সোমবার বিশ্ব আবাসন দিবস বা বিশ্ব বসতি দিবস
২৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস অক্টোবর দ্বিতীয় বুধবার আন্তর্জাতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হ্রাসকরণ দিবস
১ মে মে দিবস ১৫ অক্টোবর আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস
১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য দূরীকরণ দিবস
২৯ মে শান্তিরক্ষী দিবস ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস
২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস
২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস : ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস
জুন প্রথম শনিবার আন্তর্জাতিক সমবায় দিবস ৭ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল দিবস
১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস : ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দূর্নীতিবিরোধী দিবস
৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস : ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস
৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব স্বাক্ষরতা দিবস  ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস
১৬ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক ওজনস্তর রক্ষা দিবস  ২৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দিবস
২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ব শান্তি দিবস

উৎসঃ এই লেখাটির https://bn.wikipedia.org/wiki/ থেকে নেয়া।

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন এ্যারাবিক লিটারেচার, ইসলামিক হিস্টরী এন্ড ইসলামিক স্টাডিস)

 

 

Leave a comment