বাইতুল্লাহ বিভিন্থ অংশের বর্ণনাঃ প্রথম কিস্ত

হাজরে আসওয়াদ

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন

হাজরে আসওয়াদঃ

‘হাজরে আসওয়াদ’ হলো, কাবাঘরের দেয়ালে বিশেষভাবে স্থাপনকৃত একটি পাথরের নাম। আরবি ‘হাজর’ শব্দের অর্থ পাথর আর ‘আসওয়াদ’ শব্দের অর্থ কালো। অর্থাৎ ‘হাজরে আসওয়াদ’ শব্দের অর্থ হলো, কালো পাথর। ‘হাজরে আসওয়াদ’ বেহেশতের মর্যাদাপূর্ণ একটি পাথর। হজ্জযাত্রীরা হজ্জ করতে গিয়ে এতে সরাসরি বা ইশারার মাধ্যমে চুম্বন দিয়ে থাকেন। এই কালো পাথরটি কাবাঘরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে, ভুমি থেকে ১.১০ মিটার উচ্চতায় স্থাপিত। এই পাথটির দৈর্ঘ্যে ২৫ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ১৭ সেন্টিমিটার। পূর্বে হাজরে আসওয়াদ এক খণ্ড ছিল। কারামাতা সম্প্রদায় ৩১৯ (তিনশত উনিশ) হিজরীতে পাথরটি উঠিয়ে নিজদের অঞ্চলে নিয়ে যায়। সে সময় পাথরটি ভেঙে ৮ (আট) টুকরো হয়ে যায়। এ টুকরোগুলোর সবচে’ বড়টি খেজুরের মতো। টুকরোগুলো বর্তমানে অন্য আরেকটি পাথরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, যার চারপাশে দেয়া হয়েছে রুপার বর্ডার। তাই রুপার বর্ডারবিশিষ্ট পাথরটি চুম্বন নয় বরং তাতে স্থাপিত হাজরে আসওয়াদের টুকরোগুলো চুম্বন বা স্পর্শ করতে পারলেই কেবল হাজরে আসওয়াদ চুম্বন বা স্পর্শ করা হয়েছে বলে ধরা হবে।

হাজরে আসওয়াদের ঐতিহাসিক তথ্যঃ

ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম ও পুত্র ইসমাঈল আলাইহিস সালাম কাবার প্রাচীর তৈরি করতে করতে যখন রুকনের স্থানে পৌঁছান তখন ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম আল্লাহর নিবেদিত প্রাণপুত্র ইসমাঈলকে বলেনঃ “একটি সুন্দর পাথর খুঁজে নিয়ে এসো। পাথরখানা এখানে রাখবো। তাহলে মানুষের কাবা প্রদক্ষিণের চিহ্নের কাজ দেবে”। পুত্র ইসমাঈল আলাইহিস সালাম পিতাকে বলেনঃ “পিতা! আমি অত্যন্ত ক্লান্ত”। তিনি বলেনঃ “তবুও যাও”। তারপর পুত্র পাথরের সন্ধানে বের হলেন। এমন সময় জীবরাঈল আলাইহিস সালাম পাথরখানা নিয়ে আসেন (তারিখে মক্কা, ইবনে কাসীর)।

কাবা ঘর বহু ঘাত-প্রতিঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। তার সাথে হাজরে আসওয়াদ ও স্থানচ্যুত হয়েছে। এই কালো পাথরের সাথে বিশ্বনাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম এর সম্পর্ক জড়িত। পূর্বেই উল্লেখ করছি, ইসলামপূর্ব কোরাইশদের যুগে কাবা শরিফের গিলাফ যখন পুড়ে গিয়েছিল, তখন হাজরে আসওয়াদও পুড়ে গিয়েছিল। ফলে তার কৃষ্ণতা আরো বৃদ্ধি পায়। বিশ্বনাবীর নবুয়্যাত প্রাপ্তির কয়েক বছর আগে কাবা ঘরের নির্মাণ কাজ করার পর পাথরটি সস্থানে রাখার নিয়ে মক্কাবাসি বিভিন্ন গোত্রের মাঝে বিবাদের সৃষ্টি হয়। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয় এবং তাদের দ্বন্দ্বের পরিসমাপ্তি ঘটে। হাজরে আসওয়াদ জান্নাতের পাথর। তাই পাথর ফেরেশতাদের স্পর্শও আদম, ইব্রাহীম, ইসমাঈল আলাইহিমুস সালাম এর স্পর্শ জড়িত আছে।

 ৬৪ হিজরিতে হজ্জরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে কাবা ঘরে আগুন লাগলে হাজরে আসওয়াদটি ভেঙে একাধিক খণ্ড হয়ে যায়। কেউ কেউ বলেন এটি ৩ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে যায়। পরে হজ্জরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়ের এটিকে রুপার ফ্রেমে বাধাই করে পুনরায় কাবা চত্বরে স্থাপন করেন।আর তিনিই সর্বপ্রথম হাজরে আসওয়াদকে রুপা দিয়ে বাঁধানোর সৌভাগ্য অর্জনকারী।

• ১৭৯ হিজরিতে আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশিদ হাজরে আসওয়াদকে হীরা দিয়ে ছিদ্র করে রুপা দিয়ে ঢালাই করেন।

• ৩১৭ হিজরিতে কারামতিয়ারা হারাম শরিফে অতর্কিত আক্রমণ করে। এই শীয়া সম্প্রদায় কাবা ঘরে প্রচুর ভাংচুর ও লুন্ঠন চালায়। কাবা ঘরের বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে হাজরে আসওয়াদও লুণ্ঠন করে নিয়ে যায় তারা। সে সময় দীর্ঘ ২২ বছর কাবা ঘরে হাজরে আসওয়াদ ছিল না। ২২ বছর পর ৩৩৯ হিজরিতে কারামতি সম্প্রদায়ের কাছ থেকে পাথরটি উদ্ধার করা হয়। লুণ্ঠনের সময় পাথরটি ব্যাপক ক্ষতি ও টুকরো টুকরো হয়ে যায়। হাজরে আসওয়াদের ভাঙা অংশগুলোর মধ্যে এখনো কয়েকটি খন্ড নিখোঁজ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন এখনো পাথরের ৮ খণ্ডাংশ নিখোঁজ রয়েছে। হাজরে আসওয়াদের ভাঙা অংশগুলো কাদামাটি, মোম, অম্বর ইত্যাদি দিয়ে অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনায় মেরামতপূর্বক বাধাই করে রাখা হয়েছে।

• ৪১৩ হিজরিতে এক নাস্তিক লৌহ শলাকা দ্বারা হাজরে আসওয়াদের ওপর হামলে পড়ে। ফলে তা ছিদ্র হয়ে যায়। এরপর বনি শায়বার কিছু লোক তার ভগ্নাংশগুলো একত্রিত করে কস্তুরী দ্বারা ধৌত করে তার টুকরোগুলো ফের জোড়া লাগিয়ে দেয়।

• ১৩৩১ হিজরিতে সুলতান মুহাম্মদ রাশাদ হাজরে আসওয়াদের চারপাশে রুপার একটি নতুন বেষ্টনী তৈরি করে দেন।

• ১৩৫১ হিজরির এপ্রিলের ১৮ তারিখে বাদশাহ আবদুল আজিজ বিশিষ্ট ব্যক্তি ও আলেম-ওলামাসহ কাবা শরিফে উপস্থিত হন এবং হাজরে আসওয়াদের অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য তাতে মেশকে আম্বরের মতো মূল্যবান পাথর সংযুক্ত করেন।

• ১৪১৭ হিজরিতে পবিত্র কাবাঘরের সঙ্গে হাজরে আসওয়াদেও বিশেষ রুপার দ্বারা নতুন বেষ্টনী স্থাপিত হয়। যখনই পাথরটিতে কোনো সমস্যা বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া চিহ্ন দেখা যায় তখনই হারামাইন কর্তৃপক্ষ তা সংস্কার করে থাকেন।

হাজরে আসওয়াদ চুম্বনের ফজিলতঃ

ক। কিয়ামতের দিন চুম্বরকারীর পক্ষে স্বাক্ষ্য দিবেঃ

১. ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর কসম, এটি কিয়ামতের দিন এভাবে উত্থিত হবে যে, এর দুটি চোখ থাকবে যা দ্বারা সে দেখবে। একটি যবান হবে যদ্বারা সে কথা বলবে সত্য হৃদয়ে যে ব্যক্তি এর ইস্তিলাম করে এ তার সম্পর্কে আল্লাহর কাছে স্বাক্ষ্য দিবে। (তিরমিজি ৯৬৪, মিশকাত ২৫৭৮ হাদিসের মান হাসান)

২. সাঈদ ইবনে জুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনে আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন এই পাথরকে উপস্থিত করা হবে। তার দু‘টি চোখ থাকবে, তা দিয়ে সে দেখবে, যবান থাকবে তা দিয়ে সে কথা বলবে এবং সে এমন লোকের অনুকূলে সাক্ষ্য দিবে যে তাকে সত্যতার সাথে চুমা দিয়েছে। (ইবনে মাজাহ ৯৪৪, তিরমিযী ৯৬১, আহমাদ ২২১৬, মিশকাত ২৫৭৮)

খ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুম্বন করেছেনঃ

১. ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমি দেখেছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কায় পৌঁছে যখন হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করতেন, তখন তিনি সাত চক্করের মধ্যে তিন চক্কর দ্রুত পদক্ষেপে সমাধান করতেন। সহিহ মুসলিম ২৯৪০)

২. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটের পিঠে আরোহণ করে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন, যখনি তিনি হজ্জরে আসওয়াদের কাছে আসতেন তখনই কোন কিছুর দ্বারা তার দিকে ইশারা করতেন এবং তাকবীর বলতেন। ইবরাহীম ইবনু তাহমান (রহঃ) খালিদ হাযযা (রহঃ) থেকে হাদীস বর্ণনায় খালিদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) এর আনুসরন করেছেন। (সহিহ বুখারি ১৫১৭ ইফাঃ)

গ। এই পাথরটি জান্নাত থেকে এসেছেঃ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, হাজারে আসওয়াদ ও মাকামে ইব্রাহীম জান্নাতের ইয়াকূতসমূহের মধ্যে দু’টি ইয়াকূত। আল্লাহ এদের নূর (আলো) দূর করে দিয়েছেন। যদিও এ দু’টির নূর (আলো) আল্লাহ তা‘আলা দূর করে না দিতেন। তবে এরা পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্তের মধ্যে যা আছে তাকে আলোকময় করে দিতো। (সুনানে তিরমিযী ৮৭৮, মিশকাত ২৫৭৯)

ঘ। গুনাহের কারনে পাথরটি কালো করে দেয়া হয়েছেঃ

১. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হাজারে আসাওয়াদ যখন জান্নাত হতে নাযিল হয়, তখন তা দুধের চেয়েও বেশি সাদা ছিল। অতঃপর আদাম সন্তানের গুনাহ একে কালো করে দেয়। ( মিশকাত ২৫৭৭, সহিহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৭৩৩, সহিহ আল জামি ৬৭৫৬, সহিহ আত্ তারগীব ১১৪৬)।

২. ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হাজরে আসওয়াদ জান্নাত থেকে অবতীর্ন হয়েছিল তখন সেটি ছিল দুধ থেকেও শুভ্র। মানুষের গুণাহ খাতা এটিকে এমন কালো করে দিয়েছে। (তিরমিজ ৮৭৮,  মিশকাত ২৫৭৭)

ঙ। সকল বরকতের মালিক মহান আল্লাহঃ

১. আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ‘উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাজরে আসওয়াদকে লক্ষ্য করে বললেন, ওহে! আল্লাহর কসম, আমি নিশ্চিতরূপে জানি তুমি একটি পাথর, তুমি কারও কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না। এরপর তিনি চুম্বন করলেন। পরে বললেন, আমাদের রমল করার উদ্দেশ্য কি ছিল? আমরা তো রমল করে মুশরিকদেরকে আমাদের শক্তি প্রদর্শন করেছিলাম। আল্লাহ এখন তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। এরপর বললেন, যেহেতু এই (রমল) কাজটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন, তাই তা পরিত্যাগ করা পছন্দ করি না।(সহিহ বুখারি ১৫১০ইফাঃ)

২. উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি হাজরে আসওয়াদের কাছে এসে তা চুম্বন করে বললেন, আমি অবশ্যই জানি যে, তুমি একখানা পাথর মাত্র, তুমি কারো কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে কখনো আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না। (সহিহ বুখারি ১৫০২ইফাঃ)

হাজরে আসওয়াদের কিছু বৈশিষ্ট্য

হাদিসের গ্রন্থগুলোতে হাজরে আসওয়াদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রচুর আলোচনা এসেছে। হজ্জের কার্যাবলীর মধ্যে হাজরে আসওয়াদের একটি সম্পর্ক রয়ছে। সহিহ হাদিসের আলোকে নিম্মে হাজরে আসওয়াদের কিছু বৈশিষ্ট্য তুলে ধরলাম।

ক। হাজারে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করাঃ

১. ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজারে আসওয়াদ থেকে শুরু করে হাজারে আসওয়াদ পর্যন্ত তিন চক্কর দ্রুত পদক্ষেপে এবং চার চক্কর স্বাভাবিক গতিতে সম্পন্ন করেছেন। (সহিহ মুসলিম ২৯৪১)

২. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ্ (রা) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি, হাজরে আসওয়াদ হতে আরম্ভ করে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত তাওয়াফে (চক্করে) তিনি রমল করেছেন। (মুয়াত্তা মালেক ৮০২ সহিহ মুসলিম ১২৬৩)

৩. ইবন আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাওয়াফের শুরুতে হাজারে আসওয়াদ চুম্বন করেন, অতঃপর আল্লাহু আকবার বলেন এবং তাওয়াফের তিন চক্করে রমল করেন। আর তাঁরা যখন রুকনে ইয়ামীনের নিকট পৌঁছতেন এবং কুরায়শদের দৃষ্টি সীমার বাইরে যেতেন, তখন হাঁটতেন। আবার তাঁরা যখন তাদের (মুশরিক) সম্মুখীন হতেন, তখন রমল করতেন। এতদ্দর্শনে কুরাইশগণ বলত, এরা তো হরিণের ন্যায়। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, অতঃপর এটা সুন্নাত হিসেবে পরিগণিত হয়। (আবু দাউদ ১৮৮৭)

খ। হাজারে আসওয়াদ তাওয়াফ শেষ করাঃ

সাত চক্কের মাধ্যমে তাওয়াফ শেষ করতে হয়। যেহেতু হাজারে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করা হয় কাজেই সাত চক্কর শেষে হাজারে আসওয়াদ এসেই তাওয়াফ শেষ করতে হয়।

গ। সরাসরি বা ইশারায় হাজারে আসওয়াদকে চুম্বন করাঃ

১. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উটের পিঠে (আরোহণ করে) বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন, যখনই তিনি হজ্জরে আসওয়াদের কাছে আসতেন তখনই কোন কিছু দিয়ে তার প্রতি ইশারা করতেন। (সহিহ বুখারি ১৫১৬ ইফাঃ)

২. ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উটের পিঠে আরোহণ করে তাওয়াফ করার সময় ছড়ির মাধ্যমে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন। দারাওয়ার্দী (রহ.) হাদীস বর্ণনায় ইউনুস (রহ.)-এর অনুসরণ করে ইবনু আবিয যুহরী (রহ.) সূত্রে তার চাচা (যুহরী) (রহ.) হতে রিওয়ায়াত করেছেন। (সহিহ বুখারি ১৬০৭)

৩. ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বাহনে আরোহী হয়ে তাওয়াফ করেছেন, হাজরে আসওয়াদের কাছে পৌছে তিনি এর দিকে ইশারা করতেন। (তিরমিজ ৮৬৬, ইবনে মাজাহ ২৯৪৮)

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা)

One thought on “বাইতুল্লাহ বিভিন্থ অংশের বর্ণনাঃ প্রথম কিস্ত

Leave a comment