তিন প্রকার বিদআতে উহাহরণ

তিন প্রকার বিদআতে উহাহরণ

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন

১। বিশ্বাসগত বিদআতঃ

বিশ্বাসগত বিদআত মুলত কুফরি। যারা এই সকর আকদা পোষন করে তারা ইসলাম থেকে  খারিজ হয়ে যায়। তাই বিশ্বাসগত আকিদাকে কুফরী আকিদাও বলা যায়। কারন আকিদার ক্ষেত্রে কোন ভ্রান্তি গ্রহণীয় নয়। বিশ্বাসগত বিদআত ইসলাম ধর্মের মাঝে অনুপ্রবেশের প্রধান কারন অতিভক্তি। ইসলাম ধর্ম বা কোরআন-সুন্নাহর বিরোধীতা করে এই বিদআত চালু হয়নি বরং অতিমাত্রায় ভক্তি ও বিশ্বাস কিংবা সন্দেহ বা অজ্ঞতবশত ইসলামের মধ্যে নতুনভাবে এই বিদআত অনুপ্রবেশ করেছে। যে সকল মুসলিম ইসলাম ধর্মের অনুশ্বাসন মেনে চলতে চায় তারা কখনও কোরআন-সুন্নাহর পরিপন্থী নতুন ধ্যান-ধারণা ও বিশ্বাস রাখতে পারে কিন্তু অনেক আল্লাহ ভক্ত মুসলীম বিরোধিতা কিংবা কুফরীর ভিত্তিতে নয় শুধু অতিভক্তি বা অজ্ঞতার কারনে বাড়াবাড়ি করে বিশ্বাসগত বিদআত সৃষ্টি করেছেন।

যেমনঃ অতিভক্তির ফলে তারা বিশ্বাস করে, বিশ্বজগত পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অলী-দরবেশ ও নবী-রাসুলগণ আল্লাহ তা’আলার মত ক্ষমত রাখেন।

বিশ্বাসগত বিদআতের কয়েকটি উদাহরন হলঃ

১। বিদআতি বিশ্বসের নামে গাউস, কুতুব, আবদাল, নকিব ইত্যাদিতে বিশ্বাসি। অর্থাৎ এদের ‌নিজেস্ব ক্ষমতা আছে বিশ্বাস করে।

২। অহেদাতুল অজুদ বা সর্বেঈশ্বরবাদে বিশ্বাসি

৩। অনুপ্রবেশবাদ বা হুলূল আকিদায় বিশ্বাসি

৪। ফানাফিল্লার বা আল্লাহয় বিলীন হওয়ার আকিদায় বিশ্বাসি

৫। মুমিদের কলবে আল্লাহ থাকেন।

৬। আল্লাহর মতই নবী, রাসূল, পীর, অলী ও আউলিয়াগণ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখেন।

৭। অলীগন পৃথিবীর যে কোন স্থানে হাজির নাজির থাকেন।

৮। অনেকে বিশ্বাস  করে একটা পর্যায় দুনিয়াতে বসেই আল্লাহকে দেখা সম্ভব।

৯। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মতই কবরে জীবিত আছেন।

১০। এমনকি সুফিদের বিশ্বাস তাদের শাইখ পীর, অলী আওলিয়া কবরে জীবিত আছেন।

১১। নবী, রাসূল, অলী, আউলিয়া, পীর বুজুর্গ, মহান আল্লাহর মতই মানুষের ভাল মন্দ করার ক্ষমতা রাখেন।

১২। সুফিগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহতায়ালার সাথে তুলনা করে ও কোন কোন ক্ষেত্রে  সমান জ্ঞান করেল।

১৩। বিপদে পীর বা অলি আওলিয়াদের আহবান করলে তারা সাহায্য করতে পারে।

১৪। তাদের কবরের নিকট গিয়ে কোন কিছু চাইলে দিতে পারে।

১৫। তারা আহবান বা ফরিয়াদ শুনতে পায়

১৬। মিলাদ মাহফিল চলা কালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনে বিশ্বাস করে।

১৭। মাধ্যম ছাড়া আল্লাহ পর্যান্ত পৌছান যায় না।

১৬। অলিদের কাশফ কে তাদের নিজস্ব ক্ষমতা মনে করে। অলি আওলিয়াদের কারামত ইচ্ছাধীন মনে করা।

১৭  কোন কোন সুফি এতই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকে যে তারা মৃতকে জীবিত করতে পারে

১৮। মানব রচিত আইনগুলোতে ইসলামী আইনের চেয়ে অধিকতর উপকারী ও যুগোপযোগী মনে করা।

১৯। আল্লাহ তা’আলার পরিবর্তেন জনগণকে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী মনে করা

২০। মাজারে মান্নাত করলে বিপদ আপদ দুর হয় বলে বিশ্বাস করা।

২১। সুফিবাদ বা পীর-মুরিদীকে ইসলাম মনে করা

২২। শুধু একটি মাযহাব অনুসরণ ওয়াজিব মনে করে মান্য করা। (মাযহাব অনুসরণ করা জায়েয)

এই সকল ধরনের বিশ্বাস হলঃ বিশ্বাসগত বিদ’আত কারন তারা কুরআন সুন্নাহ বর্ণিত বিশ্বাসের সাথে বাড়িয়ে নিয়ে বিশ্বাসে বিদআত সৃষ্টি করেছেন। নবী, রাসূল, অলী, আউলিয়া, পীর বুজুর্গ সবাই মহান আল্লাহর সৃষ্টি। এই সৃষ্টির ক্ষমতা বাড়িয়ে মহান আল্লাহর ক্ষমতার সমান জ্ঞান করাই হল বিশ্বাসগত বিদ’আত।

*** বর্তমান কাদের মাঝে বিশ্বাসগত আকিদা আছে?

এক কথায় যতগুলি বাতিল ফির্কা আছে সবার মাঝেই বিশ্বাসগত বিদআত আছে। ইজতিহাদগত মাসায়েলে মতভেদ আছে থাকবে। ইমামদের মাঝে হাজার হাজার মতভেদ ছিল। বর্তমানেও বিভিন্ন ফির্কার মাঝে মাসায়েলে মতভেদ আছে অথচ দুটি পক্ষ সঠিক। এটাই ইসলামের সৌন্দর্য, এটিই ইসলামের প্রস্থতা। কিন্তু বিশ্বাসগত বিদআত ইসলাম থেকে বের করে দেয়, ফলে তারা নতুন একটি নাম নিয়ে ফির্কা সৃষ্ট করে, এদের সাথে মূল ধারার ইসলামের কোন সম্পর্ক থাকে বলেই এরা বাতিল ফির্কা নামে পরিচিত হয়।

এরকম কয়েকটি বাতিল ফির্কা হলঃ শী’আ, বাতিনিয়্যাহ, মুষাব্বিহা, জাবরিয়্যাহ, কাদরিয়্যাহ, মুরজিয়্যাহ, হাশবিয়্যাহ, কার্রামিয়্যাহ, কাদিয়ানিয়্যাহ ও বাহাইয়্যাহ, মুতাজীলা, ‌আহলে কুরআন, পারভেজী প্রভৃতি।

মন্তব্যঃ আমারা যারা সুন্নী মুসলিম দাবি করি, তাদের অনেকে মাঝে এই আকিদা লক্ষ করা যায়। আপনি যে দলেরই হোন না কেন, আপনার দলের নাম যত সুন্দরই রাখেন না কেন, আপনার আকিদায় যদি উপরে বিশ্বাসগত বিদআতগুলি লক্ষ করা যায়। তা হলে আপনি ভ্রান্ত ফির্কা অনুসারী। আমাদের উপমহাদেশে কাদিয়ানি এবং রেজভী বা ব্রেলভী ইসলামের নামে দুটি ভ্রান্ত ফির্কা এবং যারা সুফি তরিকার অনুসারী তাদের মাঝেই এই বিশ্বাসগত বিদআতগুলি লক্ষ করা যায়। কিছু সুফি তরিকা আছে যারা শুধু এই বিশ্বাসগত বিদআতেন অনুসারী নয়, তারা এর প্রচারকও বটে।

যেমনঃ আটরশীর পীর, মাইজভান্ডারী পীর, দেওয়ানবাগীর পীর, রাজারবাগীর পীর, ফুলতলীর পীর, এনায়েত পুরীর পীর প্রভৃতি। এদের মধ্যে রেজভী বা ব্রেলভী অনুসরীগণ কুরআন সুন্নাহ দলীলের ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে, এই এই বিশ্বাসগত বিদআতের প্রচার করে থাকে আর নিজেদের সুন্নী মুসলিম বলে দাবী করে থাকে। যে কেউ তাদের এই বিশ্বাসগত বিদআতের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাকে তারা ওহাবী বলে গালি প্রদান করে।

২। আমলগত বিদআতঃ

আমাদের সমাজে আমরা বিদআত বলতে শুধু আমলগত বিদআতই বুঝে থাকি। বিশ্বাসগত বা মৌখিক কথার দ্বারা আবার বিদআত হতে পারে এ সম্পর্কে অনেকের ধারনাই নেই। আমলগত বিদআত আমাদের শ্রেষ্ট তিন যুগের কোন যুগেই ছিল না। পরবর্তীতে অতি উৎসাহি আল্লাহ ভক্ত কোন কোন বান্দার মাধ্যমে সমাজে প্রচলন লাভ করে। আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রদত্ত কুরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসে উপর তারা নির্ভন না করে নিজেদের মত করে আমল তৈরি করে মহান আল্লাহ সন্ত্বষ্টি অর্জনের চেষ্টা করে। এই ভাবে সুন্নাহ বহির্ভূত আমলের মাধ্যমে আল্লাহ সন্ত্বষ্টি অর্জনের নিমিত্তে আমলগত বিদআতে সৃষ্টি। আমলগত বিদআত সৃষ্টিকারী নিজেও জানেনা যে আমলটি বিদআত। সে শুধু জানে এর মাধ্যমেই হয়ত মহান আল্লাহ রাজী খুসি হবেন। অথচ এই সব কাজের ভিত্তি কুরআন সুন্নাহ খুঁজে পাওয়া যায় না।

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি কেউ আমাদের এই দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করে যা তাতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। (সহিহ বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ৪৩৪৩, আবূ দাঊদ ৪৬০৬, আহমাদ ২৩৯২৯, তাহক্বীক্ব আলবানী, হাদিসের মান সহিহ)।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  বলেছেন, অবশ্যই তোমাদের মধ্যে যারা আমার বিদায়ের পর জীবিত থাকবে তাঁরা অনেক রকমের মতভেদ দেখতে পাবে। অতএব তোমরা আমার ও আমার সুপথপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদ্বীনের  সুন্নাহ অবলম্বন করো, তা দাঁত দ্বারা দৃঢ়তার সাথে ধারণ করো। আর (দ্বীনে) নব রচিত কর্মসমূহ হতে সাবধান! কারণ, নিশ্চয় প্রত্যেক বিদআত (নতুন আমল) হল ভ্রষ্টতা। (আবু দাঊদ ৪৪৪৩, তিরমিযী ২৮১৫, ইবনে নাজাহ ৪২ নং)

আমলগত বিদআতের বিস্তারিত আলোচনা পঞ্চম অধ্যায় করা হয়েছে। প্রতিটি বিদআতে আলদা আলাদা শিরোনামে আলোচিত হয়েছে।

***  কাদের মধ্যে আমলগত বিদআত লক্ষ করা যায়ঃ

কোন নির্দিষ্ট ফির্কার কথা আর কি বলল, আমাদের সবার মাঝেই আমলগত বিদআত প্রচলিত আছে। মনে হবে সমাজ থেকে আমলগত বিদআত বাদ দিলে আর দ্বীদের কিছু বাকি থাকে না। সমাজে আমলগত বিদআত এতই প্রচলিত যে, কোন আমলগত বিদআত বাদ দিলে মনে হবে সুন্নাতই বাদ পড়ে গেল। কারন আমরা বিদআতকে সুন্নাহ মনে করে খুবই ভালবেসে আমল করেছিলাম।

ইসলামে শুরুতে শিয়া এ খারেজীরা প্রথম আমলগত বিদআত শুরু করে। আজও শিয়ারা পাল্লাদিয়া মাজার বানিয়ে আমলগত বিআদত প্রচার ও প্রসার করছে। ইহার উৎকৃষ্ট উদাহরন ৩৫ একর নিয়ে ইমাম খোমেনীর মাজার।

ভারত উপমহাদেশে কাদিয়ানী ও রেজভীদের বলা যায় আমলগত বিদআতের ভান্ডার বা স্টোর হাউজ। তাদের আমলগত বিদআত বাদ দিলে তাদের মাঝে আসল দ্বীন বলতে আর কিছুই আর বাকি থাকবে না। তাদরে বিদআতের পরিধি এই বেশী যে, সুন্নাহ খুজে পাওয়া কঠিন। যারা সুফিবাদে বিশ্বাসি তারা বিভিন্ন তরিকার কথা বলে নতুন নতুন (বিদআত) আমল আবিস্কার করছে। সুন্নী মুসলিমগনের মাঝে সুফি তরিকার মাধ্যমে আমলগত বিদআত প্রসার বেশী হয়। এই সুফি তরিকাকে বলা হয়, “আমলগত বিদআতের পাওয়ার হাউজ”। এদের বিদআতি আমল দেখলে এদেরকে মুসলিম ভাবতে আপনার কষ্ট হবে। যাদের ইসলামি শরীয়া সম্পর্কে মোটামুটি জ্ঞান আছে বা বুঝে শুনে দ্বীন পালন করেন।  তারা এদের বিদআতী আমল দেখলে বলতে বাধ্য হবেন, এই আমল ইসলাম ধর্মের নয়, এটা একটা নতুন ধর্মের আমল। আর এদের ধর্মের নাম সুফিবাদ। এ ছাড়া আমরা যারা হানাফি, দেওবন্দী, জামাতী, তাবলিগী ইত্যাতি ফির্কার সাথে জড়িত তাদের মাঝেও আমলগত অনেক বিদআত পরিলক্ষিত হয়। উপমহাদের আহলে হাদিস ভাইদের মাঝে বিদআতের আমল কম হয় বললে ভুল হবে না।

৩।  মৌখিক কথার বিদআতঃ

যে সকল মৌখিক আমল বা কথার কোন ভিত্তি দ্বীন ইসলামে নেই অথচ আমরা সেই সব কথাকে দ্বীন মনে করি তাকে মৌখিক বিদআত বলে। মৌখিক বিদআত কোরআন ও বিশুদ্ধ হাদীসে ভিত্তি নেই এ ধরনের যে কোনো বাচনিক যিকির, দু’আ ও ‘ইবাদাত হল মৌখিক কথার বিদ’আত। আবার মৌখিক আমল করি না। কিন্তু কথাটি ইসলামের শরীয়া বিরোধী। এই দুই মৌখিক কথাই হল মৌখিক কথার বিদআত, হোক সেটা আমলগত বা আমলহীন। মৌখিক কথার বিদআত দুই প্রকারে হয়ে থাকে।

১। আমলগত মৌখিক বিদআত

২। আমলবিহীন মৌখিক বিদআত

*** আমলগত মৌখিক বিদআতঃ

অনেক ইবাদাত আছে যে গুলি আমরা শুধু মৌখিক উচ্চারনে করে থাকি যেমন, জিকির, কুরআন তেলওয়াত, সত কাজের আদেশ, অসত কাজের নিষেধ ইত্যাদি। এই সকল আমল যখন সুন্নাহর বাহিরে গিয়ে বাড়িয়ে নিজের মত করে তৈরি করে আদায় করা হয় তখন আমলগত মৌখিক বিদআত হবে। যেমনঃ জিকির মহান আল্লাহ একটি ইবাদাত। মহান আল্লাহ বলেনঃ

فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُواْ لِي وَلاَ تَكْفُرُونِ

অর্থঃ সুতরাং তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদের স্মরণ রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর; অকৃতজ্ঞ হয়ো না। (সুরা বাকারা ২:১৫২)

তিনি আরও বলেনঃ আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলতা অর্জন কর, (৮:৪৫)। যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্বরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়,  জেনে রাখ আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়, (১৩:২৮)। যাদের হৃদয় ভয়ে কম্পিত হয় আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে, (২২:৩৫)। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ, ২৯:৪৫)। হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর, (৩৩:৪১)। যারা আল্লাহ ও আখেরাতের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ, (৩৩২০)।

মহান আল্লাহর এই আদেশের এক নম্বর অনুসারী ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর দ্বিতীয় সারির আমলদার ছিলেন সাহাবীগণ। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবীগনের জিকিরের মধ্যে অন্যতম শব্দ ছিলঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ইত্যাদি। এগুলি পরিপূর্ণ কালিম এর অর্থও সুন্দর কিন্তু এক শ্রেণীর মুসলিম প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদত্ত আমলে খুসি না হয়ে আবিস্কার করলেন আল্লাহু, আল্লাহু, ইল্লাল্লাহ, ইল্লাল্লাহ জিকির। শুধু আল্লাহু, আল্লাহু, ইল্লাল্লাহ, ইল্লাল্লাহ, বলে জিকির করা কি শরীয়ত সম্মত নয় কারন আল্লাহু বা ইল্লাল্লাহ, শব্দ দ্বারা যিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করতে চাইলে বা ইবাদত হলে নিশ্চই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবিগণ করতেন। যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহে আল্লাহু, আল্লাহু, ইল্লাল্লাহ, ইল্লাল্লাহ জিকির করার কোন দলীল নেই তাই এ সকল জিকির বিদআতী জিকির।

এমনি ভাবে অনেকে শুধু হু, হু, হু, হু করে জিকির করে যা হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অথবা সাহাবীগনের এমনটি করেন নি এবং এই মর্মে কোনো প্রমান পাওয়া যায় না। এটা একেবারেই নতুন আবিষ্কৃত বিষয় যা শতভাগই বিদআত।

অনেক মুসলিককে দেখা যায় জোরে জোর জিকির করছেন। জিকির করতে করতে বুহুস হয়ে যাচ্ছে। অনেক  সমবেত হয়ে একসাথে গলায় গলা মিলিয়ে জিকির করছে। আর মনে করছেন জিকিরের মাধ্যমে মহান আল্লাহকে রাজি খুসি করে ফেলেছি। অথচ তারা যানে না ইহার দ্বারা ইবাদত না হয়ে মহান আল্লাহর বিরুদ্ধাচান করা হচ্ছে। মহান আল্লাহ বলেন,

*وَاذْكُر رَّبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعاً وَخِيفَةً وَدُونَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالآصَالِ وَلاَ تَكُن مِّنَ الْغَافِلِينَ*

অর্থঃ আর স্মরণ করতে থাক স্বীয় পালনকর্তাকে আপন মনে ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় এবং এমন স্বরে যা চিৎকার করে বলা অপেক্ষা কম।  সকালে ও সন্ধ্যায়। আর বেখবর থেকো না। (সূরা আরাফ ৭:২০৫)

মহান আল্লাহ বললেন, আস্তে আস্তে, ক্রন্দনরত ও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় জিকির করতে আর আপনি করলেন চিৎকার করে। একবার ভাবুন তো, আল্লাহ আদেশ অমান্য করলে তিনি খুসি হবেন তো!!!

আমলগত মৌখিক বিদআতের উদাহরণঃ

১। আযানের আগে বা পরে জোরে জোরে রাসূল (সা.)-এর প্রতি সালাত ও সালাম প্রেরণ করা

২। জানাযার নামায শেষে দাফনের পূর্বে মুনাজাত করা এবং মৃত ব্যক্তিটি কেমন ছিল প্রশ্ন করা।

৩। নামায ও রোযার নিয়ত মুখে শব্দ করে উচ্চারণ করা

৪। বিদআতি পন্থায় জিকির করা

****  আমলবিহীন মৌখিক বিদআতঃ

মুখে অনেক কথা বলি কিন্তু তাকে আমরা ইবাদাত মনে করি না। এই সকল কথা অনেক সময গুনাহের কারন হয়। এই সকল কথা কোন ভিত্তি ইসলামে নেই, তারপরও বিষয়টি এখান আলোচনা কারন এই সকল আমলবিহীন মৌখিক কথার দ্বারা আমরা গুনাহগার হচ্ছি।  মৌখিক কথা আমলহীন বিদআতের মধ্য অন্যতম হল, অর্থক কথা, ভ্রমন কাহিনী, কল্পকাহিনী, গালগল্প, পুরাকাহিনী, হাসি-ঠাট্টা, কথা-কাহিনী, গল্প, উপন্যাস, গান বাজনা যাতে বেহুদা কথা, অবান্তর কথা, বাজে কথা, অর্থহীন কথা, খেল তামাসা, ক্রীড়া কৌতুক ইত্যাদি থাকে। তখন তাকে শয়তানের কন্ঠ বা কথা বলা হয়। ইসলামি শরীয়তে এই ধরনের শয়তানের কন্ঠ বা কথা সম্পূর্ণ হারাম। আল্লাহ তায়ালা শয়তানকে সম্বোধন করে বলেছেনঃ

*وَاسْتَفْزِزْ مَنِ اسْتَطَعْتَ مِنْهُمْ بِصَوْتِكَ وَأَجْلِبْ عَلَيْهِم بِخَيْلِكَ وَرَجِلِكَ وَشَارِكْهُمْ فِي الأَمْوَالِ وَالأَوْلادِ وَعِدْهُمْ وَمَا يَعِدُهُمُ الشَّيْطَانُ إِلاَّ غُرُورًا*

অর্থঃ (হে ইবলিশ) তোর কন্ঠ (আওয়াজ/গান বাজনা/কথা/দাওয়াত) দিয়ে তাদের মধ্যে যাকে পারো প্ররোচিত করো। স্বীয় অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে তাদেরকে আক্রমণ কর, তাদের অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হয়ে যাও এবং তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেও। ছলনা ছাড়া শয়তান তাদেরকে কোন প্রতিশ্রুতি দেয় না।  (সূরা বনি ইসরাঈল ১৭:৬৪)।

এ আয়াত-এর ব্যাখ্যায় তাফসীর ইবনে জারীর-এর ১৫/৭৬ পৃষ্ঠায় আল্লামা ইবনে জারীর তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেছেন যেঃ “হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত আয়াত সম্বন্ধে বলেন, শয়তানের কন্ঠ (صَوْتِ) এর অর্থ হচ্ছে ক্রীড়া ও সঙ্গীত বা গান-বাজনা।

সূরা আন-নাজম এর ৫৯-৬১ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেনঃ

أَفَمِنۡ هَـٰذَا ٱلۡحَدِيثِ تَعۡجَبُونَ * وَتَضۡحَكُونَ وَلَا تَبۡكُونَ * وَأَنتُمۡ سَـٰمِدُونَ *

অর্থঃ তাহলে কি এসব কথা শুনেই তোমরা বিস্ময় প্রকাশ করছো? হাসছো কিন্তু কাঁদছো না? অথচ তোমরা সঙ্গীত বা গান-বাজনা করছো?” (সূরা আন-নাজম ৫৩:৫৯-৬১)।

আমলহীন মৌখিক বিদআতের শাস্তি সস্পর্কে পবিত্র কুরআনের বলা হয়েছেঃ

*وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ*

অর্থঃ আর মানুষদেরই মধ্যে কেউ কেউ না জেনে আল্লাহর পথ থেকে মানুষ কে বিভ্রান্ত করার জন্য বেহুদা কথা (গান/অবান্তর/বাজে/অর্থহীন কথা) খরিদ করে।  এবং তারা ঐগুলোকে হাসি-ঠাট্টা হিসাবে গ্রহন করে। এ ধরনের লোকদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব৷ (সুরা লুকমান ৩১:৬)।

        এই তিনটি শব্দের একাধীক অর্থ থাকলেও বেহুদা কথা/অবান্তর কথা/বাজে কথা/অর্থহীন কথা/শয়তানের কন্ঠ/শয়তানের আওয়াজ/শয়তানের গানবাজনা/শয়তানের কথা/শয়তানের দাওয়াত/খেল তামাসা/ ক্রীড়া কৌতুক ইত্যাদি শব্দগূলিকে আমরা খারাপ গান কে অভহিত করতে পারি। এই জন্য খারাপ কথা দ্বারা সাজান গান সব সময় খারাপ হবে। গানের কথা যখন অশ্লীল হবে এবং তার ভীতর অর্থহীন বাজে কথা থাকবে তখন তাকে শয়তানের আওয়াজ বললে কারো আপত্তী থাকার কথা না। আর এই ধরনের অশ্লীল কথা/ বাজে কথা/ বেহুদা কথা/অবান্তর কথা/অর্থহীন কথা মালা দ্বারা যখন গান সাজান হয় তখন তাকে হারাম বলা হবে। এ ধরনের কথা যারা বলে তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর আযাব। কিন্ত গানের কথায় যদি শরীয়ত বিরোধী কোন কথা না থাকে, কোন অশ্লীল কথা না থাকে তবে তা হারাম হবে না।

আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, গায়িকা দাসী বিক্রি করবে না। এবং কিনবেও না। তাদের গান শিক্ষা দিবে না। এদের ব্যবসায়ে কোন কল্যাণ নাই। এদের মূল্য হারাম। এদের মত লোকদের ব্যাপারেই এই আয়াত নাযিল হয়েছেঃ

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ

মানুষের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য ক্রয় করে এবং আল্লাহর পথকে ঠাট্রা-বিদ্রুপ করে। ওরা তারাই, যাদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। (সূরা লুকমান ৩১:৬, সুনানে তিরমিজি ১২৮৫ ইঃফাঃ)।

গানে সাধারণ অসার এ আজে বাজে কথাই বেশী থেকে থাকে। কোন মুসলিম যদি কুফরীবিহীন অসার কথামালা দ্বারা গান গেয়ে থাকে তবে তাকে মৌখিক আমলহীন বিদআত বলা যাবে কিন্ত গানের কথায় যদি কুফরী থাকে তবে তার অবস্থান হবে ইসলামের বাহিরে। তাকে আর মুসলিম বলা যাবে না।

এই সকল অর্থক কথা, ভ্রমন কাহিনী, কল্পকাহিনী, গালগল্প, হাসি-ঠাট্টা, কথা-কাহিনী, উপন্যাস, গান বাজনা, বেহুদা কথা, অবান্তর কথা, বাজে কথা, অর্থহীন কথা, খেল তামাসা প্রভৃতির বাহিরেও অনেক কথার প্রচলন আছে যাকে আমরা কুসংস্কার বলি। এইগুলি বর্তমান সমাজে ধর্মের নামে কিংবা সামাজিকভাবে প্রচলিত আছে। অজ্ঞলোকেরা ইহাকে ধর্মেরই অংশ মনে করে থাকে। যদি ধর্মের অংশ মনে না করত, তাহলে আমরা মৌখিক কথা আমলহীন বিদআত বলতে পারতাম না। এই সকল মৌখিক আমলহীন বিদআত বা কুসংস্কার যে নামেই এগুলো সম্ভোধন করা হোক না কেন, এর একটি ভয়াবহ দিক আছে। আর সে দিকটা হল এগুলি মুখে বলতে বলতে যখন অন্তরে স্থায়ীভাবে গেড়ে বসে যায় অর্থাৎ এগুলির প্রতি আমাদের বিশ্বাস জম্মে তখন সেগুলি শির্ক এবং কুফুরিতে রুপান্তিত হয়। বিনষ্ট করে দেয় মুমিনের ঈমান-আমল, বাতিল হয়ে যায় তার ইসলামি বিশ্বাস। মানুষের ঈমান-আমল বিনষ্টকারী এ্ মৌখিক আমলহীন বিদআত বা কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের ফরজ।

গানের মাধ্যমে আমলহীন মৌখিক কথার বিদআত হলঃ

০১। লোকজগানঃ বাংলাদেশে প্রায় অর্ধশত প্রকার লোকসঙ্গীতের প্রচলন আছে। জারি সারি, ভাটিযালি, ভাওয়াইয়া, ভাওয়াইয়া,  মুর্শিদি, মারফতি, বাউল,  গম্ভীরা,  কীর্তন, ঘাটু, ঝুমুর, আলকাপ, লেটো, গাজন, বারমাসি, ধামালি,  পটুয়া, সাপুড়ে, খেমটা প্রভৃতি ধারার শত শত গান আজও প্রচলিত আছে। লৌকিক ও আধ্যাত্মিক চেতনায় সমৃদ্ধ এসব গানের বাণীতে জাতির অন্তর্জীবনের পরিচয় পাওয়া যায়। কতক গানে ধর্মীয় আবেগ জড়িত আছে। তবে অধিকাংশ গানই চিত্তবিনোদনের মাধ্যম হিসেবে ধরা হয় আর আনন্দ দানের মাধ্যমে হিসাবে কিছু অশ্লীল বা ইসলাম বিরোধী কথা এসে যায়, যা জাচাই বাচাই করে গাওয়া সম্ভব নয়। যেনমঃ মেয়েলি গীত, সহেলি গীত, হুদমা গীত ইত্যাদিতে নারীসমাজের কামনা বাসনার প্রতিফলন ঘটেছে।

০২। বাউল গানঃ বাংলায় বাউল নামে এক অধ্যাত্মবাদী চারণকবি সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটে। মনে করা হয়, তান্ত্রিক কর্তাভজা সম্প্রদায় ও ইসলামি সুফি দর্শনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল এদের গানে। বাউলরা তাদের চিরন্তন অন্তর্যামী সত্ত্বা মনের মানুষ-এর ঘুরে ঘুরে গান গাইতেন এবং ধর্মে ধর্মে ভেদাভেদ ও আনুষ্ঠানিকতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে তারা নতুন ধর্ম আবিস্কার করে যার নাম দেন “মানব ধর্ম”। মধ্যযুগের হাসন রাজা, কুষ্টিয়ার লালন ফকির ও আধুনিক যুগের বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম এ সব ইসলামি বিরোধী গানের রচয়িতা।

৩। আধুনিক গানঃ এই গানে শুধু প্রেমিক প্রেমিকার অশ্লীল কথা, ভালবাসার কথা, রাগ-বিরাগের কথা, ছলনার কথা, বিরহের কথা ইত্যাদিতে সাজান। এই সকল কথার গান বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে উস্কদেয় যা ইসলামি শরীয়তে হারাম ঘোষনা করা হয়েছে। যেমনঃ সুন্দরীগো দোহাই দোহাই মান কর না……।

০৪। দেশত্ব বোধক গানঃ এই গানে দেশ প্রেমের পাশাপাশি শির্কি কথা স্থান পায়। দেশকে ভালাবাসা বা দেশের জন্য যুদ্ধ করে জীবন দান করার কথা ইসলাম ধর্মের অন্যতম রীতি। কিন্তু দেশকে ভালবাসার নামে সৃষ্টি কর্তার সাথে তুলনা করা শির্কি কাজ। তেমনি দেশে ইবাদাত করাও শির্ক কাজ।

যেমনঃ ও আমার দেশে মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা……….।

০৫। মারেফাতি গানঃ এই গানের মাঝে আধ্যাত্মিকতার নামে শির্কি কথায় ভরা। এই গান সুফিবাদ ও সন্ন্যাসি প্রতি আগ্রহ সৃষ্ট করে যা ইসলাম থেকে দুরে সরিয়ে দেয়। এমনি শির্কি কাজ করতে বলে থাকে।

যেমনঃ এক গানে বলা হয় আহমদ এবং আহাদের পার্থক্য শুধু “মিম” শব্দের। আর্থাৎ আল্লাহ ও মুহাহম্মাদ (সাঃ) মাঝে কোন পার্কথ্য নেই, পার্থক্য শুধু “মিম” শব্দের, যা ষ্পষ্ট কুফরী।।

****  সমাজে প্রচলিত এমন কিছু আমলহীন মৌখিক কথার বিদআত হলঃ

০১। দোকানের প্রথম কাস্টমার ফেরত দিতে নাই।

০২। বিড়াল মারলে আড়াই কেজি লবণ দিতে হবে।
০৩। জোড়া কলা খেলে জোড়া সন্তান জন্ম নিবে।
০৪। রাতে নখ, চুল ইত্যাদি কাটতে নাই।
০৫। ভাই-বোন মিলে মুরগী জবেহ করা যাবে না।
০৬। ব্যাঙ ডাকলে বৃষ্টি হবে।
০৭। কুরআন মাজীদ হাত থেকে পড়ে গেলে আড়াই কেজি চাল দিতে হবে।
০৮। রাতে বাঁশ কাটা যাবে না।
১০। রাতে গাছের পাতা ছিঁড়া যাবে না।
১১। বিধবা নারীকে সাদা কাপড় পরিধান করতে হবে।
১২। ভাঙা আয়না দিয়ে চেহারা দেখা যাবে না। তাতে চেহারা নষ্ট হয়ে যাবে।
১৩। ডান হাতের তালু চুলকালে টাকা আসবে। আর বাম হাতের তালু চুলকালে বিপদ আসবে।
১৪। বৃষ্টির সময় রোদ দেখা দিলে বলা হয় শিয়ালের বিয়ে।
১৫। রাতের বেলা কাউকে সুঁইসূতা দিতে নাই।
১৬। খালি ঘরে সন্ধ্যার সময় বাতি দিতে হয়। না হলে ঘরে বিপদ আসে।
১৭। মহিলার পেটে বাচ্চা থাকলে কিছু কাটা-কাটি বা জবেহ করা যাবে না।
১৮। হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে ভাগ্যে দুর্ভোগ আছে।
১৯। হাত থেকে প্লেট পড়ে গেলে মেহমান আসবে।
২০। পাখি ডাকলে বলা হয় ইষ্টি কুটুম (আত্মীয়) আসবে।
২১। তিন রাস্তার মোড়ে বসতে নাই।
২২। কাক ডাকলে বিপদ আসবে।
২৩। শকুন ডাকলে মানুষ মারা যাবে।
২৫। পেঁচা ডাকলে বিপদ আসবে।
১৬। পোড়া খানা খেলে সাঁতার শিখবে।
২৭। পিঁপড়া বা জল পোকা খেলে সাঁতার শিখবে।
২৮। রাতের বেলা কোন কিছু লেন-দেন করা যাবে না।
২৯। রাতের বেলা কাউকে চুন ধার দিলে চুন না বলে ধই বলতে হয়।
৩০। বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তায় যদি হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় তাহলে যাত্রা অশুভ হবে।
৩১। বিনা ওযুতে বড় পীর (!!) আবদুল কাদের জিলানীর নাম নিলে আড়াইটা পশম পড়ে যাবে।
৩২। নখ চুল কেটে মাটিতে দাফন করতে হবে।
৩৩। স্ত্রীগণ তাদের নাকে নাক ফুল না রাখলে স্বামীর বেঁচে না থাকার প্রমাণ।
৩৪। স্বামীর নাম বলা জাবে না এতে অমঙ্গল হয়।
৩৫। হঠাৎ বাম চোখ কাঁপলে দুখ: আসে।
৩৬। গলায় কাটা বিঁধলে বিড়ালের পা ধরে মাপ চাইতে হবে।

সংকলনেঃ মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন এ্যারাবিক লিটারেচার, ইসলামিক হিস্টরী এন্ড ইসলামিক স্টাডিস)

Leave a comment